1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন

মোংলায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিতর্কিত বক্তব্যে প্রকৃত ঘের মালিকদের মধ্যে উত্তেজনা

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১১৮ বার পড়া হয়েছে

বাগেরহাট প্রতিনিধি::মোংলায় ঢাকাইয়া ঘের নামে সাড়ে ৩’শ বিঘার চিংড়ি ঘের নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৮ আগষ্ট অনুষ্ঠিত শোক সমাবেশে সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদারের এক বক্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ওই চিংড়ি ঘের এবং একই এলাকার শুকুর শেখের চিংড়ি ঘের উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার ভাইপোরা জোরপূর্বক দখল করে খাচ্ছে। এনিয়ে স্থানীয় আ’ লীগের দুটি গ্রুপ এবং প্রকৃত ঘের মালিকদের মধ্যে বিবেধ সৃষ্টি হয়। এই বিবেধকে ঘিরে এলাকায় দু’ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে মিঠাখালীর ইউনিয়নে ওই ঘেরে গিয়ে দেখা যায় জমি তার সেই ঘের করছেন। ৪৬ জন অংশিদার সমবায় ভিত্তিতে এই ঘেরে চিংড়ি চাষ করছেন। এসময় কথা হয় চিংড়ি চাষী বরিশালের বাসিন্দা মিজান খাঁনের সাথে। তিনি বলেন, তার এই ঘেরে ১০০ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া জমি রয়েছে স্থানীয় খবির আলী শেখের ১২ বিঘা, টিপু হাওলাদারের ২৬ বিঘা, আলতাব হোসেনের আট বিঘা, আব্দুল হাইয়ের ৩০ বিঘা, অশিনি মন্ডলের ১৫ বিঘা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদের ১৬ বিঘাসহ ৪৬ জনের সাড়ে ৩০০ বিঘার জমি রয়েছে। তারা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অংশীদারদের মাধ্যমে সমবায় ভিত্তিতে এই জমিতে চিংড়ি ঘের করে আসছেন। আর ঘেরটি পরিচালনা করছেন মিঠাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ’ লীগ নেতা উৎপল মন্ডল।

জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উৎপল মন্ডল বলেন, ২০ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে এই মাছের ঘেরটি করা হচ্ছে। এখানে জোর জবর করে এককভাবে করার কোন সুযোগ নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার এবং ভাইপো টিপু ও প্রিন্সরা জোরপূর্বক ঘের খাচ্ছে, এ কথার কোন ভিত্তি নাই। সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে গিয়ে তাদের জড়িয়ে যে কথা বলেছেন তা অত্যান্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এতে দলে বিবেধ সৃষ্টি হবে।

চিংড়ি ঘেরের অংশিদার সুখরঞ্জন, আবদুল হাই ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াদুদ বলেন, এই চিংড়ি ঘের মিঠাখালী ইউনিয়নের মধ্যে। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদারের বাড়ী সোনাইলতলা ইউনিয়নে। তারতো এখানে আসার প্রশ্নই ওঠেনা এবং তাকে আমরা কখোনো এখানে আসতে দেখিনি। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আরও সচেতন হয়ে বক্তব্য দেওয়া উচিত উল্লেখ করে তারা বলেন, এসব নোংরা রাজনীতি করে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে দলে বিবেধ সৃষ্টি না করতে সবাইকে অনুরোধ জানান।

ঘের ব্যবসায়ী টিপু হাওলাদার বলেন, ঢাকাইয়া ঘের নামে পরিচিত সাড়ে তিন’ শ বিঘার চিংড়ি ঘেরে ২৬ বিঘা এবং একই এলাকার ঘের ব্যবসায়ী শুকুর শেখের ২০০ বিঘার ঘেরের মধ্যে ১০০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে তিনি চিংড়ি চাষ করছেন। তাকে জড়িয়ে সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যাচার করছেন।

চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ী শুকুর শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার জমি কেউ দখল করে খাচ্ছে না। আমার জমির লীজ নিয়ে টিপু হাওলাদার সমান অংশীদার ভিত্তিতে চিংড়ি ঘের করছি। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদারকে জড়িয়ে যেসব বক্তব্য রাখা হচ্ছে তা আদৌ সঠিক নয়।

এদিকে সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার বলেন, গত ২৮ আগষ্ট শোক সভার সমাবেশে যে বক্তব্য দিয়েছি তা সত্য।

তবে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার বলেন, তাকে এবং তার ভাইপোদের জড়িয়ে ইকরাম ইজারাদার যে বক্তব্য দিয়েছে তা রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে হেয় করতেই দিয়েছে। প্রকৃত জমির মালিকরদের সাথে কথা বললেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
Theme Customized By BreakingNews