আন্তর্জাতিক ডেস্ক::ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। তার আগে থেকেই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ওলেকসি রেজনিকভ। চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি।
রোববার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি এ কথা জানান। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলেনস্কি ভাষণে জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘নতুন পদ্ধতির’ সময় এসেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে ওলেকসি রেজনিকভের উত্তরসূরি হিসেবে রুস্তেম উমেরভকে মনোনীত করেছেন তিনি। রুস্তেম উমেরভ ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি তহবিলের পরিচালক।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের সময় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সংস্থার সবচেয়ে বড় ঝাঁকুনির মঞ্চ তৈরি করেছে এ ঘোষণা। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে রুস্তেম উমেরভের পার্লামেন্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি মনে করি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে নতুন করে সাজানোর প্রয়োজন রয়েছে। এই মন্ত্রণালয়ের নতুন পন্থা দরকার, যাতে সমাজ ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে এই মন্ত্রণালয় মিথস্ক্রিয়া ঘটাতে পারে।
এদিকে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ওলেকসি রেজনিকভকে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। যেখানে পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে তার রয়েছে ভালো সম্পর্ক।
৫৭ বছর বয়সী ওলেকসি রেজনিকভ আন্তর্জাতিকভাবে বেশ পরিচিত ব্যক্তি। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তাকে পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করতে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেনের জন্য অর্থ, অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা পাওয়ার পেছনে তার ছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
তবে ওলেকসি রেজনিকভের মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে আগে থেকে গুঞ্জন ছিল, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারেন।
তবে তার বরখাস্ত হওয়ার গুঞ্জন কিছুদিন ধরে চলছিল। গত সপ্তাহে রেজনিকভ সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে সরকারের অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করার সুযোগ পাওয়া সাপেক্ষে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ ছাড়তে রাজি ছিলেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেলেনস্কি প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের জেরে পদ খোয়াতে হয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভকে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির সূচক অনুসারে, ইউক্রেন ১৮০টি দেশের মধ্যে ১১৬তম স্থানে রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাদের অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।
Leave a Reply