নিজস্ব প্রতিনিধি::খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, খুলনা মহানগরী এবং শহরতলী এলাকার মানুষের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের মাঝে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। তিনি বলেন খুলনায় পর্যাপ্ত খাস জমি নাই, সেকারণে জমি ক্রয় করে বহুতল ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করলে আবাসন সংকট নিরসন করা সম্ভব। রেলওয়ের জায়গাসহ যে সব সরকারি জায়গায় ছিন্নমূল মানুষেরা বসবাস করছে সেখানে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে এই সব মানুষ সংকটে পতিত হবে। সে কারণে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরী।
সিটি মেয়র রবিবার সকালে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে “শহুরে অনানুষ্ঠানিক বসতিতে মৌলিক পরিসেবাসহ পর্যাপ্ত বাসস্থানের সুযোগ” শীর্ষক অংশীজন সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
খুলনায় অনানুষ্ঠানিক বস্তিতে বসবাসকারী মানুষের জন্য মৌলিক পরিসেবাগুলির প্রাপ্যতা নিয়ে আলোচনা করার জন্য বেসরকারি সংস্থা ‘হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ’ এ সংলাপের আয়োজন করে। অনানুষ্ঠানিক বসতিতে বসবাসকারী মানুষদের সার্বিক সহায়তা প্রদান এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করাই ছিল এ সংলাপের মূল উদ্দেশ্য।
সংস্থার ন্যাশনাল ডিরেক্টর রায়আন লুই মাদ্রিদ-এর সভাপতিত্বে সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) লস্কার তাজুল ইসলাম, খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ ও সমাজসেবা অধিদপ্তর-খুলনার বিভাগীয় পরিচালক মোঃ আব্দুর রহমান। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড’ আশিক উর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে কেসিসি’র কাউন্সিলর কাজী আবুল কালাম আজাদ বিকু, আরিফ হোসেন মিঠু, চীফ প্লানিং অফিসার আবির উল জব্বার, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড’ মনজুর মোর্শেদ, কেসিসি’র আর্কিটেক্ট রেজবিনা খানম, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের এ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার শাহনেওয়াজ মেহেদী, সাংবাদিক এইচএম আলাউদ্দিন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার মোহাম্মদ মোস্তফা, জিআইজেড-এর প্রতিনিধি আতিয়ার রহমান, সিডিসি টাউন ফেডারেশনের চেয়ারম্যান রোকেয়া রহমান, জেজেএস-এর নির্বাহী পরিচাল টিএম জাকির হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।
অনানুষ্ঠানিক বসতিতে বসবাসকারীদের মানসম্মত জীবনযাপনের জন্য আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং জীবিকার জন্য প্রয়োজনীয়তাগুলি যে মানের হওয়া দরকার সেখানে বিভিন্নভাবে ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া বাসস্থান, পানীয় জল, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যবিধি, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইত্যাদির ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ। এমনকি তাদের জীবনযাত্রার এই অবস্থা সমাজের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন তৈরি করতে অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধক বলে সংলাপে জানানো হয়। শহুরে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে বিদ্যমান অবস্থার উন্নয়নে কার্যকরী সমন্বয় এবং সহযোগিতার মাধ্যমে শহরের বস্তিসমূহে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করে নি¤œ আয়ের মানুষদের টেকসই আবাসনসহ মৌলিক পরিসেবা এবং আর্থ-সামাজিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের জীবিকার অগ্রগতি করা সম্ভব বলে সংলাপে মতামত ব্যক্ত করা হয়। এ সকল মানুষের মৌলিক সুবিধাসহ সাশ্রয়ী মূল্যে পর্যাপ্ত আবাসনের জন্য সংলাপে উত্থাপিত পরামর্শ, মতামত ও প্রস্তাবনাসমূহ নগর উন্নয়নের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিগণ বিবেচনায় আনবেন বলে সংলাপে প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।
Leave a Reply