1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

আজ ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক::আজ সোমবার (৭ নভেম্বর)। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত সমালোচিত বিতর্কিত দিন এটি। ১৯৭৫ সালে সংগঠিত এদিনের ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে যে ওলটপালট করে দেয় তার রেশ থেকে আজও মুক্ত হতে পারেনি বাংলাদেশের রাজনীতি। ৭ নভেম্বর অনেকের কাছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, অনেকের কাছে সৈনিক-জনতার অভ্যুত্থান দিবস আবার অনেকের কাছে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস। কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে তৃতীয় দিবসের প্রতিই রায় পাওয়া যায়।

তথাকথিত সিপাহী বিপ্লবের নামে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শুরু হয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যদের হত্যার ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

১৯৭৫ সালের এদিনে সিপাহী বিপ্লবের নামে প্রথমে হত্যা করা হয় তিন খ্যাতনামা মুক্তিযোদ্ধাকে। এরা হলেন- খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম, কে এন হুদা বীর উত্তম এবং এ টি এম হায়দার বীর বিক্রম। দশম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদর দপতরে অবস্থানকালে সকালে তাদের একেবারে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে দুজন কোম্পানি কমান্ডার আসাদ এবং জলিল।

সাংবাদিক অ্যান্থনী ম্যাসকারেনহাস এ ব্যাপারে লিখেছেন, এছাড়াও এদিন উশৃঙ্খল জওয়ানরা একজন মহিলা ডাক্তারসহ ১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এমনকি একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীকেও এ সময় হত্যা করা হয়।

লেখক গবেষক গোলাম মুরশিদ তার ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’ গ্রন্থে লিখেছেন, শাফায়াত জামিল বিদ্রোহের খবর পেয়েও থেকে গিয়েছিলেন বঙ্গভবনে। কিন্তু যখন উশৃঙ্খল বিদ্রোহী সেনারা শ্লোগান দিতে দিতে বঙ্গভবনের কাছাকাছি পৌঁছে যায়- তখন তিনি সঙ্গীদের নিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে যান। এতে তার পা ভেঙ্গে যায় এবং ভাগ্যচক্রে পরে ধরা পড়েন। তার জায়গা হয় সামরিক হাসপাতালে। তিনি বেঁচে যান।

‘এর আগে ৬ নভেম্বর ভোর রাতে গৃহবন্দি জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করতে যায় বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুকের ল্যান্সার বাহিনীর একটি দল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় যার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল সেই ল্যান্সার মহিউদ্দিন ছিল এই দলের নেতৃত্বে। তারা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসে কর্নেল রশিদের দুই নম্বর অ্যার্টিলারি রেজিমেন্টের দফতরে।’

গোলাম মুরশিদ আরো লিখেন, মুক্তি পেয়েই জিয়াউর রহমান সদ্য নিযুক্ত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে (বিচারপতি আবু সাদত সায়েম) কথা না বলেই বেতারে ভাষণ দিতে চলে যান। ৭১-এর ২৭ মার্চের মতোই সংক্ষিপ্ত ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর অনুরোধে তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। একাত্তরের ২৭ মার্চ তিনি প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। পরে শুধরে নিয়েছিলেন। এবারও তিনি নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসাবে ঘোষণা করেন। পরে উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হয়েছিলেন। পরবর্তীতে একে একে গণভোট, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন দিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করলেও, তার আমলে ২০টির বেশি অভ্যুথান হয়েছিল বলে বিভিন্ন তথ্যে পাওয়া যায়। এক হিসাবে প্রায় প্রতি তিন মাসে একটি করে অভ্যুথানের চেষ্টা হয়েছিল জিয়ার শাসনামলে।

মার্কাস ফ্র্যান্ডার মতে- এই অভ্যুথানের কারণে আড়াই হাজার সেনা সদস্য নিহত হয়।

সবশেষ ১৯৮১ সালের ৩০মে চট্রগ্রামে সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর মেজর জেনারেল মন্জুরসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল এবং গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

ঘটনাবহুল এই দিনটিকে সারা দেশে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করবে আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সোমবার দেশব্যাপী সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান দিবস নামে দিনটি পালন করবে। এ উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আগামীকাল বিকাল ৩টায় শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদ নেতা শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি জাসদের সব জেলা-উপজেলা কমিটিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অনুরূপ কর্মসূচির মাধ্যমে ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান দিবস পালন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
Theme Customized By BreakingNews