বাগেরহাট প্রতিনিধি ::বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় বিরোধপূর্ণ সরকারি জমি দখল করে করাত কল স্থাপনের চেষ্টা করছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহন আলী বিশ্বাস। চিতলমারী সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন সরকারি জমিতে স‘মিল নির্মানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, চিতলমারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বেদবতী মিস্ত্রী স‘মিল নির্মানের কাজ স্থগিত করে দেওয়ার পরেও, নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতি।
এদিকে কাজ বন্ধ করা ও ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন চিতলমারী উপজেলা বাসিন্দা রাজু আহমেদ নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগ থেকে জানাযায়, চিতলমারী উপজেলা ৮ নং কুরমনি মৌজায় হাট বাজারের ফেরীপেরি ভুক্ত খাস জমিতে মোহন আলী বিশ্বাস করাতকল (স‘মিল)সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করেছেন। খবর পেয়ে গত ৮ ডিসেম্বর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বেদবতী মিস্ত্রী কাজ স্থগিত করে দেন। কিন্তু এরপরেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় মোহন বিশ্বাস স‘মিল ও স্থাপনা নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সীমানা প্রাচীরের সাথেই টিনসেড স‘মিলের স্থাপনা। স‘মিলের জন্য কনক্রিটের উপর লোহার অবকাঠামো রয়েছে। চারপাশে বেশকিছু কাঠ রয়েছে।
স’মিলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল শেখ বলেন, এই জমিতে এক সময় বাঁশের হাট ছিল। কিন্তু মোহন আলী বিশ্বাস চেয়ারম্যান হওয়ার পর এই জায়গা দখল করে স‘মিল নির্মান করেছেন। কয়েকদিন আগে কাজ বন্ধ ছিল, আবার দেখছি স‘মিলের কাজ শুরু করেছে।
আবুল কালাম নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, তহসিল অফিস হওয়ার আগে থেকেই এখানে বাঁশের হাট ছিল। এখনতো দখল করে স‘মিল বানানো হয়েছে। জায়গা খোলা থাকলে, সবার উপকার হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযোগ প্রদানকারী রাজু আহমেদ বলেন, মোহন আলী বিশ্বাস জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে সরকারি জমিতে স‘মিল নির্মান করছেন। বিভিন্ন সময় এই জমি সংক্রান্ত মামলায় সে হেরে গেছে। তার সব ধরণের কাগজ জালজালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। বাজারের মূল্যবান সরকারি সম্পত্তি হওয়ায় জনস্বার্থে আমি এই অভিযোগ করেছি। আমি চাই এই জায়গাটি সবার কল্যানে ব্যবহৃত হোক।
এ বিষয়ে মোহন আলী বিশ্বাস বলেন, আমার জমির সব কাগজপত্র ঠিক আছে। সরকার মামলা করে একাধিক বার হেরেছে। এখন সরকারি অফিসের সামনে মিল থাকায় ইউএনও স্থানান্তর করতে বলেছে। আমি মিল বিক্রি করে দিবো বলেছি। দুই মাস ধরে সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বেদবতী মিস্ত্রী বলেন, আদালতে ও ভূমি আপিল বোর্ডেও মামলা থাকার পরেও, মোহন আলী বিশ্বাস ওই জমিতে স‘মিল নির্মানের চেষ্টা করছিলেন। আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসমত হোসন বলেন, মোহন আলী বিশ্বাসের অবকাঠামো কাজ আপাতত বন্ধ করে রাখতে বলা হয়েছে। যতদুর জানি তার করাতকলের লাইসেন্স নেই। সরকারি অফিসে কাছে কোন অবস্থাতে করাত কল স্থাপন সম্ভব নয়। জায়গা জমি সংক্রান্ত বিষয়টি সহকারী কমিশনার ভূমি ( এসিল্যান্ড ) দেখছেন।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, কোন ভাবেই সরকারি জমি কেউ জবর দখল করতে পারবে না। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
Leave a Reply