1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
‘ছাত্রলীগ ব্যর্থ হলে পুলিশ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে’ দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাগেরহাটে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা নয়াবাটী হাজী শরিয়ত উল্লাহ বিদ্যাপীঠে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা মোড়েলগন্ঞ্জে গ্রাম আদালত বিষয়ক কমিউনিটি মত বিনিময় সভা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমিরাতের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বৈঠক বাগেরহাটে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলার প্রতিবাদে ছাত্র সমাজের বিক্ষোভ ইয়ং টাইগার্স অনূর্ধ্ব ১৪ জাতীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে প্রেসকনফারেন্স মোংলায় কোস্টগার্ডের অভিযানে আ.লীগ যুবলীগের তিন নেতাকর্মী আটক বিশ্ব সরকার সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

পাইকগাছায় জ্বালানী সংকট নিরসনে দিন দিন বৃদ্বি পাচ্ছে গোবরের শলার কদর

  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

পাইকগাছা (খুলনা)::খুলনার পাইকগাছায় জ্বালানী সংকট নিরসনে দিন দিন বৃদ্বি পাচ্ছে গোবরের শলার কদর। আর গোবরের শলার জ্বালানীর চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে অভাব দূর করছেন অভাবগ্রস্থ পরিবারের গৃহিণীরা।

জ্বালানির অভাব দূর করতে গোবরের তৈরি শলা বা মশাল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জ্বালানি হিসেবে এর চাহিদা বাড়ায় শীত মৌসুমে গোবরের শলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীরা।গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ও ইট ভাটায় জ্বালানী হিসেবে গাছ কেটে কাঠ ব্যবহার করায় দিন দিন জ্বালানী সংকট প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জ্বালানী সংকট থেকে বাঁচতে এ উপজেলার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষ এখন গোবরের মশলা রান্নার কাজে জ্বালানী হিসাবে ব্যাবহার বেড়েছে।এতে করে নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি গোবরের তৈরি শলা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেক নারী।

গোবরের কম্পোষ্ট সার খুবই উৎকৃষ্ট হওয়ায় কৃষকরা জমিতে গোবর দিয়ে ভাল ফলন ফলিয়ে থাকে। ফলে সবসময়ই কৃষকদের মাঝে গোবরের কদর ব্যাপকভাবে দেখা যায়। যাদের গরু আছে কিন্তু আবাদি জমি নেই তারাও কৃষকদের কাছে গোবর বিক্রি করত। কিন্তু বর্তমানে কৃষকদের গোবরে ভাগ বসিয়েছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মহিলারা। তারা জ্বালানীর বিকল্প হিসেবে গোবর ব্যবহার করছেন। গোবরের তৈরি জ্বালানী নিজেদের সমস্যার সমাধান করেও বাজারে বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন।

জানা যায়, অভাবগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের শিশু সন্তানদের দিয়ে রাস্তার পাশ, মাঠ বা গবাদিপশুর বিচরণের স্থান থেকে গো-বর্জ্য সংগ্রহ করে থাকে। আবার অনেক নারী পার্শ্ববর্তী সচল পরিবারের গোয়ালঘর থেকেও গো-বর্জ্য সংগ্রহ করেন। পরে নারী ও শিশুরা গৃহস্থালী কাজের ফাঁকে বা অবসরে জ্বালানির জন্য শলা বা মশাল তৈরি করে।গোবরের শলার তৈরি এমন এক প্রকার জ্বালানী যা তৈরি করা খুবই সহজ।পরিবেশ সহায়ক এ জ্বালানী তৈরিতে উপকরণ হিসেবে প্রয়োজন গরু বা মহিষের গোবর, পাট খড়ি, ধানের তুষ (কুড়া)। গোবরের শলা তৈরির আগে মাপ মতো পাট খড়ি কেটে গোবর,তুষ ও কুড়া একত্রে মিশিয়ে পাট খড়ির সঙ্গে মুঠো করে রোদে শুকাতে হয়। এছাড়াও মুঠো বা চেপটা করে রোদে শুকিয়েও ব্যবহার করা যায়।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে গোবরের শলা বা মশাল তৈরিতে ব্যস্ত দরিদ্র পরিবারের মহিলারা। গদাইপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম জানান, তার স্বামী শ্রম দিয়ে যা উপার্জন করে তা দিয়ে সংসার চলে না। ঘরের জ্বালানি চাহিদা মিটিয়ে গোবরের মশাল বিক্রি করে যে টাকা পান তিনি তা সংসারে খরচ করেন। গোবরের শলা ভালভাবে শুকানোর পর ঘরের প্রয়োজন মিটিয়ে বাদবাকি বিক্রি করেন। ১ শত মশাল ২শত টাকা দরে বিক্রি করা হয়।ব্যবসাহীরা গ্রামে ঘুরে পাইকারি দরে মশাল ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করছে। তিনি আরো জানান,এ উপজেলায় মাছের লিজ ঘেরেও গোবরের তৈরি শলা চাহিদা রয়েছে। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত পাটখড়ির পাশাপাশি গোবরের তৈরি শলা দিয়ে নিজেদের জ্বালানি সমস্যা তো দূর হচ্ছে আবার তা বাজারে বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন।

এ উপজেলায় দিন দিন জ্বালানী সংকট মারাত্বক আকার ধারণ করছে। জ্বালানী সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করতে হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির পরিবারগুলোকে। জ্বালানীর অভাবে চুলা জ্বালাতে পারছেনা দরিদ্র জনগোষ্ঠির গৃহিণীরা। দফায় দফায় গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে জ্বালানী কাঠের উপর দিন দিন চাপ বেড়েই চলেছে। জ্বালানী সংকট মোকাবেলায় গোবরের শলার লাকড়ি তৈরি করা হচ্ছে পুরোদমে। আর গোবরের শলার জ্বালানীর চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে অভাব দূর করছেন অভাবগ্রস্থ পরিবারের গৃহিণীরা।

জ্বালানি সংকটের কারণে গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। জ্বালানির অভাবে রান্না করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় গরীব গৃহিণীদের। এমনকি দফায় দফায় গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকে গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গোবরের তৈরি শলা। এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিন আগে এর ব্যবহার ছিল গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু বর্তমানে জ্বালানি সংকট ও দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রায় সব শ্রেণির মানুষ এ গোবরের শলা স্বল্পমূল্যে কিনে জ্বালানি হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের মহিলারা গোবরের শলা তৈরি করে নিজেদের জ্বালানির চাহিদা মিটিয়েও তা বিক্রি করে সংসারের খরচ চালিয়ে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
Theme Customized By BreakingNews