ফরিদপুর::সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শামীম হককে ৫৯ হাজার ৯ ভোটে হারিয়েছেন তিনি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান তালুকদার রোববার রাতে ফলাফল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন এ. কে. আজাদ। রাত যত গভীর হয়, এ.কে. আজাদের বাড়িতে জনতার উপস্থিতি তত বাড়তে থাকে। সোমবার সারাদিনও একই চিত্র দেখা যায়।
এ. কে. আজাদের ঝিলটুলির বাড়িতে আজ সকাল থেকেই জনস্রোত দেখা যায়। জনতার স্রোত বাড়ি ছাড়িয়ে পাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে। তাদের সবাই ছুটে এসেছেন এ. কে. আজাদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে। ফরিদপুর পৌর আওয়ামী লীগ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, সমকাল সুহৃদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীর ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন ফরিদপুরের মাটি ও মানুষের এই নেতা। কেউ ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান, কেউ আবার এ. কে. আজাদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে ফরিদপুর সদরের নতুন অভিভাবককে বরণ করে নেন।
এ সময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে এ. কে. আজাদ বলেন, এ বিজয় আপনাদের। এ বিজয় আমার প্রত্যেক নেতাকর্মীর। এ বিজয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। এ বিজয় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। আমি আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।
এ. কে. আজাদ জনতার স্রোত ও তাদের ভালোবাসা দেখে যারপরনাই আপ্লুত হন। ছলছল চোখ ও ভারী হয়ে আসা কণ্ঠে ফরিদপুরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাই সত্যের পথকেই বেছে নিয়েছেন। মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছি, সেই স্বপ্ন আমি পূরণ করব। ফরিদপুরের উন্নয়নে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। এখন তা বাস্তবায়নের পালা।
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের পাশে থেকে, আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে এ জনপদকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে গড়ে তুলব।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা আমাদের অনেকভাবে আক্রমণ করেছে। আপনারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিহিংসায় জড়াবেন না।
আইনি পথে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের মোকাবিলা করার কথা জানিয়ে এ. কে. আজাদ বলেন, আমরা প্রত্যেকটা অপরাধের জন্য মামলা করেছি। আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাব। সামছুল হক ভোলা মস্টারসহ আমাদের অনেক নেতাকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের পাশে থেকে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। আমি আপনাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ।
ফরিদপুর-৩ আসনের ১৫৪ কেন্দ্র মিলিয়ে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. আজাদ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী শামীম হক পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট।
এ. কে. আজাদের এমন নিরঙ্কুশ বিজয় ভোটারদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে নিরব প্রতিবাদ হিসেবে জনগণ ভোট বিপ্লব ঘটিয়েছে। তারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে যোগ্য মানুষকে বেছে নিয়েছেন। এখন ফরিদপুরের ভাগ্য বদলের সময়। ফরিদপুরকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার সময়। এ. কে. আজাদ ফরিদপুরের ভাগ্যবদলের নেতা।
Leave a Reply