অরুণ দেবনাথ, ডুমুরিয়া (খুলনা)::জনগণের ভালোবাসা নিয়ে ভূমি মন্ত্রী হলেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে মহামান্য রাস্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী পরিষদের অন্যান সদস্যদের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানেই তিনি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি প্রথমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পরে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেও তাকে রাখা হয়নি মন্ত্রী পরিষদে। পাঁচ বছর পর আবারও পূর্ণমন্ত্রী হয়ে ফিরছেন মন্ত্রীপরিষদে। জনপ্রিয় এ নেতা মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার খবর পাওয়ায় ডুমুরিয়া ফুলতলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল বের করে,মিস্টি বিতরণও করে। ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ বলেন: বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ভূমি মন্ত্রীর দায়িত্ব পওয়ায় আমরা আনন্দিত। তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন বলে আমরা আশাবাদি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ৫ ম বারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় শপথ নেন।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি বলেন; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার উন্নয়নকে জনগণ সঠিক মূল্যায়ন করেছেন। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। সরকারের এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বকে কার্যকর করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার উলা গ্রামের মৃত কালীপদ চন্দ্রের মেঝ ছেলে। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা ছিলেন রেণুকা বালা চন্দ। উলা গ্রামের পাঠশালায় তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু। বান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক্যুলেশন পাশ করেন। ১৯৬৩ খ্রি: দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ খ্রি: তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ খ্রি: একই বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। মাস্টার্সের ফল প্রকাশের আগেই নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়ার সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে এই স্কুল থেকে সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পায়। ১৯৭৩ খ্রি: ৭ মে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রচেষ্টায় ডুমুরিয়ায় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র চালু হয়। এর আগে খুলনা শহরে শিক্ষার্থীদেও ম্যাটরিক পরীক্ষা দিতে হতো। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিএড পাসকরেন। তিনি ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন। তার স্ত্রী উষা রানী চন্দও স্কুল শিক্ষক। তার বড় ছেলে অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একজন সদস্য। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠা করেন থানা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান।
Leave a Reply