1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
তিন ইসরায়েলিকে মুক্তির পর ১৮৩ ফিলিস্তিনির মুক্তি পতিত সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে-প্রধান উপদেষ্টা ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’: সারাদেশে ১৩০৮ জন গ্রেফতার ধানমন্ডি ৩২ ভবনের বেজমেন্টে পানি সেচে পাওয়া গেলো না কিছুই বঞ্চিত ৭৬৪ কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন বটিয়াঘাটায় পূবালী ব্যাংকে ইসলামী ব্যাংকিং কর্ণারের উদ্বোধন যৌথ বাহিনীর অভিযানে নোয়াখালীর হাতিয়ায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীসহ ৫ জন আটক বাগেরহাটে শেখ হেলাল, তন্ময়. বাদশাসহ ৩৫ জনের নামে মামলা, সাবেক এসপি কারাগারে খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত ২৭ বছর পর দিল্লির মসনদে বসছে বিজেপি

সারা দেশে তীব্র শৈতপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা চলমান থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি হচ্ছে না

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১২৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি: সংগ্রহীত
দিলীপ কুমার দেব, সাতক্ষীরা:: সারা দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা এবং বৃষ্টিপাত চলমান থাকায় ঠাÐাজণিত কারণে শিশু কিশোরদের সর্দি, কাশি, জ্বর ও নিউমনিয়া দেখা দিলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা হচ্ছে না। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে অভিভাবকেরা। অভিভাবকেরা স্কুলে পাঠাতে চাচ্ছেন না তাদের সন্তানদের। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে। অভিভাবকেরা বলছেন, শীতের কারণে তাদের সন্তানেরা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা একান্ত প্রয়োজন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা না নামলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করার কোন সুযোগ নেই। অপর দিকে একই দিনে দুই সিদ্ধান্ত থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে তীব্র শৈতপ্রবাহ। পৌষের শুরুতে তেমন একটা ঠাÐা না থাকলেও মাঘের শুরুতে জেঁকে বসেছে শীত। সারা দিনে কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে পারচ্ছে না সাধারণ মানুষ। বেলা বাড়লেও ঘন কুয়াশার দাপটে যেন তেজহীন হয়ে পড়েছে সূর্য। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা মিলছে না। সেই সাথে চলমান তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও সারা দেশে বৃষ্টিপাত হওয়ায় শীতের আরও তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এতে বেশি বিপাকে পড়েছে বিদ্যালয়গামী কোমলমতি শিশু কিশোরা।
এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ১৬ জানুয়ারী স্মারক নং-ওএম/৭৪/ম/১৪-৭৮-এ সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা সংক্রান্ত এক পত্রে বলা হয়, “দেশে বিভিন্ন জেলায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে। চলমান এ শৈত্যপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে মর্মে জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যে সকল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে (সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসের প্রমাণক অনুযায়ী) নেমে যাবে, আঞ্চলিক উপ পরিচালকগণ ঐ সকল জেলার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তদুর্ধ্ব না হওয়া পর্যন্ত) রাখার নিদের্শনা প্রদান করবেন।”
এই পত্র জারির কিছুপরই “সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস নয়, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা নামলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা যাবে” মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং-৩৭.০০.০০০০.০৭২.৪৪.০২২.১৭.১১, তারিখ: ১৬/০১/২০২৪ খ্রি: অনুযায়ী অপর একটি পত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)কে জানানো হলে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একই স্মারক নম্বর ও তারিখ (স্মারক নং-ওএম/৭৪/ম/১৪-৭৮, তারিখ: ১৬/০১/২০২৪ খ্রি:) অনুসারে সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত অপর এক পত্রে জানানো হয়, ১৭ ডিগ্রি নয়, কোনো জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আঞ্চলিক উপ পরিচালকরা স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে আঞ্চলিক উপ পরিচালকরা স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন জানিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো তা সংশোধন করা হয়েছে।
আবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে কোনো জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রি নিচে নামে, সেক্ষেত্রে সেই জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জনৈক অভিভাবক স্বপন কুমার দাস বলেন, যেখানে সারা দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা থাকায় জনজীবন মারাত্মক বিপর্যস্ত, তারপর শীতের মধ্যে আবার বৃষ্টি। সেখানে শিশু কিশোরকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে যাওয়া খুবই কষ্টকর। এত ঠাÐার মধ্যে সকালে স্কুলে যাতায়াতের কারণে শিশু কিশোরদের সর্দি-কাশি, জ্বর, এমনকি নিমউনিয়া দেখা দিচ্ছে। এসব সত্তে¡ও সরকার স্কুল ছুটি ঘোষণা করছে না। বরং একই দিনে সরকারের বিভ্রান্তিকর ছুটি ঘোষণা হতাশ করেছে।
সাতক্ষীরা সুলতানপুর সরকারি প্রাইমারী স্কুলে পড়া ৬ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর মাতা রাশিদা আখতার বলেন, সকাল ৮টায় তাঁর মেয়ে তাসলিমাকে স্কুলে আসতে হয়। তীব্র শীতে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একারণে কয়েক দিন স্কুলে আসতে পারছে না।
সাতক্ষীরা শহরের মুক্তিযোদ্ধা সড়কে বসবাসকারী লিপি রাণী মÐল বলেন, আমার মেয়ে ঐতিহ্য সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির প্রভাতী শাখার ছাত্রী। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ যাবৎ তীব্র শীতের কারণে তার মেয়েকে স্কুলে পাঠানো হচ্ছে না।
১৮ জানুয়ারি সাতক্ষীরার কয়েকটি স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগের দৃশ্য। তীব্র শীতের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে উপস্থিতির হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ জানান, তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা এবং বৃষ্টিপাত থাকায় স্কুলে উপস্থিতির হার কম। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাত যাচ্ছেন না। তারা জানান, চারিদিকে ঘন কুয়াশা ও কনকনে হিমেল বাতাস থাকায় স্কুলের দরজা জানালা বন্ধ করে ক্লাসে লাইট জ্বালিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। শিক্ষকরা আরও জানান, শীতের কারণে উপস্থিতির হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ সুফিয়ান রুস্তম বলেন, কয়েকদিন ধরে প্রচÐ ঠাÐা পড়ায় শিশু কিশোরদের সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমনিয়া বেড়েই চলেছে। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা এবং বৃষ্টির পানি শরীরে পড়লেই সর্দি, কাশি, জ্বর দেখা দিচ্ছে। এজন্য অভিভাবকদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, এই ঠাÐা অবস্থায় ছেলেমেয়েদের বাইরে পাঠানো যাবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
Theme Customized By BreakingNews