গাজী তরিকুল ইসলাম ,বটিয়াঘাটা (খুলনা):- বটিয়াঘাটা উপজেলার এক সময়ের খরস্রোতা শৈলমারী নদী এখন নালায় পরিণত হয়েছে। উজানের পানির চাপ না থাকায় পলি পড়ে চর জেগেছে নদীর দু’পাড়ে।যে কারনে সুযোগ সন্ধানী একটি চক্র চর দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে। রাতারাতি ওই চক্রটি মাটি কেঁটে জেগে ওঠা চরের শ্রেণি পরিবর্তন করে ফেলছে। দখলদারদের মধ্যে রয়েছে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, ভূমিদস্যু ও নদী পাড়ের স্বার্থন্বেষী মানুষ। দখল করা চরে চোখের নিমিশেই দখলদারা তাদের দখলকৃত জায়গার চারপাশে উঁচু ভেড়ি বাঁধ দিয়ে কেও ভরছে বালি কেও আমার বাঁধ দেওয়া যায়গায় করছে মাছ চাষ। দিনের পর দিন এভাবে চর দখল হওয়ায় সংকুচিত হয়ে পড়ছে নদীর প্রশস্ততা। যে কারনে আশংকা দেখা দিয়েছে বর্ষায় পানির চাপে প্লাবিত হয়ে দু-পারের লোকালয়ে জলাবদ্ধতা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বটিয়াঘাটা সদরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈলমারী নদীটি শাখা নদী হয়ে পশ্চিমে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ডুমুরিয়া উপজেলার সাথে গিয়ে মিশেছে। নদীটির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বটিয়াঘাটা ব্রিজের উপর থেকে একটু পশ্চিম দিকে তাকালেই শৈলমারী খেয়াঘাট। এখানে রয়েছে শৈলমারী নদীর মুখে ১০ ভেন্টের (কপাট) স্লু্ুইস গেট। যার সাথে টানানো রয়েছে একটি সাইন বোর্ড। তাতে লেখা ব্যক্তি মালিকানাধীন এই জমিতে স্লুইস গেট তৈরি করেছে পাউবো।লক্ষ লক্ষ টাকায় নির্মিত ওই স্লু্ুইস গেট দিয়ে সঠিক সময় পানি সরবরাহের বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পাশেই রয়েছে একটি ইটভাটা। নদীর দুই পাশে দেখা গেছে কয়েক’শ দখলদারদের নমুনা। যারা নদীর চরে ভেড়ি দিয়ে বালি ভরাট করেছে, কেউ ভেড়ি দিয়ে মাছ চাষ করছে, কেউ ভেড়ি দিয়ে পজিশন নিয়েছে। যা নিয়ে ইতিপূর্বে খুলনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা দ্বারা তদন্ত করে শৈলমারী নদীর খাস জমিতে অবৈধ দখলদারদের একটি তালিকা জেলা প্রশাসক খুলনার কার্যালয়ের অভিযোগ শাখায় তথ্য প্রেরণ করলেও এখনো কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। যে কারনে দিন দিন বাড়ছে দখলদারের সংখ্যা।
স্হানীয় এলাকাবাসীরা জানায় দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে ধীরে ধীরে এই নদীর মৃত্যু ঘটেছে। এক সময় এই নদীর প্রবল স্রোতের কারণে নৌকা চালানো কঠিন ছিল। অথচ ভাটার সময় এখন হেঁটে পার হওয়া যায় । যেভাবে দু-পাড়ের চর দখল হচ্ছে অবস্থাদৃষ্টে মনে হবে অতিস্বত্বর নদীর অস্তিত্ব একেবারেই বিলিন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে দাকোপ-বটিয়াঘাটার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল জানান, সবেমাত্র শপথ নিয়েছি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত সকল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদীর স্বাভাবিক গতি পথ ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং নদীটি খননের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্হা নেওয়া হবে।
বটিয়াঘাটার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আসাদুর রহমান বলেন, কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি সম্পত্তি দখল করে থাকে তাহলে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়।
Leave a Reply