বাগেরহাট প্রতিনিধি:: বাগেরহাটের প্রত্যন্ত উপজেলা কচুয়ায় প্রথমবারের মত উন্মুক্ত ম্যারাথন দৌড় অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টায় কচুয়া উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। সাইনবোর্ড-কচুয়া সড়কের চরকাঠি নামক স্থান ঘুরে উপজেলা সদরের হাজেরা খাতুন হেলথ কেয়ার সেন্টার চত্বরে এসে জড় হয় প্রতিযোগীরা। একই ধরণের টিশার্ট পড়া বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রতিযোগিদের উপস্থিতিতে চত্বরটি এক মিলন মেলায় পরিনত হয়। স্থাণীয় তরুণদের স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন মর্নিংবার্ড এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে ১০৩ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহন করেন।
কচুয়ার মত পিছিয়ে পড়া উপজেলায় এমন আয়োজনে খুশি অংশগ্রহনকারী ও স্থানীয়রা। ম্যারাথনে অংশ নেওয়া চিকিৎসক বেলফার হোসেন বলেন, মানুষের পেটের দিকে তাকালে বোঝা যায় সে কি পরিমান রোগের ঝুকিতে আছে। আর পেট স্বাভাবিক রাখার জন্য দৌড়ের কোন বিকল্প নেই। কচুয়ার এই আয়োজন খুব ভাল লেগেছে। মাঝে মাঝে এমন আয়োজন স্থানীয়দের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকা থেকে ম্যারাথনে অংশ নিতে আসা সাংবাদিক আহরার হোসেন আরিফ বলেন, ম্যারাথনে আসব বলে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসিনি।কচুয়ার মত জায়গায় এমন আয়োজন ভাবতেই ভাল লাগছে। এই ধরণের সামাজিক কর্মসূচি তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখার পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
সাইনবোর্ড-কচুয়া সড়কের ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দৌড়ে একমাত্র মোঃ রাজু সুমন নামের এক যুবক খালি পায়ে অংশগ্রহন করেন। তিনি এই দৌড়ে প্রথম হন। দ্বিতীয় হন তারিক হাসান এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন ডা. দিপঞ্জয় মিরবর। পরে বিজয়ীদের ক্রেস্ট ও মেডেল তুলে দেন অতিথিগণ। অংশগ্রহকারী সকলকে মেডেল ও টিশার্ট প্রদান করা হয় মর্নিং বাডের্র পক্ষ থেকে।
পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ মাসুদুর রহমান, ডা. বেলফার হোসেন, ডা. জব্বার ফারুকী, সাংবাদিক আহরার হোসেন আরিফ, কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোহসীন হোসেন, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মীর জায়েসী আশরাফী জেমস, যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান বাবু, জেলা পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান ঝুমুর, ব্যবসায়ী মঈনুল ইসলাম শিকদার, উদ্যোক্তা শেখ সুজনসহ গন্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। মর্নিং বার্ডের অংশগ্রহনে এই ম্যারাথনে ১০৩ জন প্রতেিযোগী অংশগ্রহন করেন।
মর্নিংবার্ডের অন্যতম উদ্যোক্তা ডা. দিপঞ্জয় মিরবর বলেন, একটা মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত শুধু দেহটাই থাকবে। কিন্তু নানা কারণে আমরা এই দেহ তথা স্বাস্থ্যের যত্ন নেই না। আসলে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। এই বিষয়ে সচেতন করতেই আমাদের এই আয়োজন। আয়োজনটি অনেক সফল হয়েছে। কচুয়া উপজেলায় বাড়ি থাকা স্বত্তেও কাজের সূত্রে যারা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতেন, তারাও আমাদের যাকে সারা দিয়ে এসেছেন ম্যারাথনে। এক কথায় কচুয়াবাসীর একটা মিলন মেলার সৃষ্টি হয়েছিল ম্যারাথন ঘীরে। আগামীতেও এ ধরণের আয়োজন করার আশ্বাস দেন তিনি।
Leave a Reply