অরুণ দেবনাথ, ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি:: খুলনার ডুমুরিয়ায় পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামল থেকেই আজও কতিপয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের দোসর মাগুরখালী ইউনিয়নে কোড়াকাটা এলাকায় রউখালী নামক সরকারি খালে একাধিক ক্রস বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে দেদারসে। এতে প্রায় দুই হাজার বিঘা জমির পানি নিষ্কাশনের অযোগ্য হয়ে কৃষি কাজে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষি পরিবার। এলাকাবাসী ওই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস না পেয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের দ্বারহস্থ হয়েছেন। তবে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এমনটি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
দায়েরকৃত অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নের কোড়াকাটা মৌজাধীন প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা বিশিষ্ট হেতালবুনিয়া মিস্ত্রী বাড়ি সীমানার ওয়াপদা বেড়ীবাঁধ হতে কোড়াকাটা কালি মন্দির কালভার্ট পর্যন্ত খালটি এক সময়ে প্রবাহমান ছিল।খালটি দিয়ে হেতালবুনে,কোড়াকাটা ও শুকুরমারি বিলের পানি নিস্কাশনের একমাত্র পথ কালি মন্দির কালভার্ট হাতি টানা নদীতে পড়ে আসছে দীর্ঘকাল। এমতাবস্থায় গত আওয়ামী সরকারের আমলে গত পনের বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী দোসর ভবতোষ ওরফে ভবানী মন্ডল,ভুপতি মন্ডল,সনজিদ মন্ডল ও মুকুন্দ মন্ডল ওই খালের একাধিক স্থানে ক্রস বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। ফলে ওই বিলের পানি নিষ্কাশনে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে কৃষি ও মৎস্য চাষে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমনকি চলতি শুকনো মৌসুমে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বোরো চাষে ব্যর্থ হয়েছে কৃষকরা। এখনও পর্যন্ত মৎস্য ঘেরের পানি বের করতে না পারায় ঘের গুলো শুকাতে পারছে না এমন অভিযোগ অনেকেরই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় দিলীপ কুমার মিস্ত্রী, দিপংকর সানা,স্বপন সরদার,তাপস বাছাড়, সনাতন সানা সহ অনেক চাষীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালী ওই ব্যক্তিদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস না পেয়ে আমরা প্রায় পথে বসেছি। এরআগে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। তবে আশা করছি এবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এর প্রতিকার পাবো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভবতোষ ও ভুপতি মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তারা দায় স্বীকার ও একে অপরকে দোষারোপ করে বলেন, সবাই বাঁধ অপসারণ করলে পর্যায়ক্রমে আমরাও বাঁধ কেটে দেবো।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আসাদুর রহমান বলেন, সরকারি খালে ক্রস বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের কোন সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।