বাগেরহাট প্রতিনিধি : : বাগেরহাট পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক মোঃ জসিম সরদারের দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন জেলা শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি সলিম ভুইয়ার ভাই আজিম ভুইয়া ও তার লোকজন। বুধবার (১২ মার্চ) রাতে শহরের বাসাবাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে যুবদল নেতা জসিমকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় সেখান থেকে খুলনা এবং খুলনা থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় শ্রমিক দল নেতা সেলিম ভূঁইয়ার ভাই আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন শহরের নাগের বাজার এলাকায় মোঃ জসিম সরদার প্রতিবেশী আজিম খান নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করেন। রাত ৮টার দিকে বাসাবাটি এলাকার বগা ক্লিনিকের সামনে বসে, আজিম ভূঁইয়ার কাছে মারধরের কারণ জানতে চায় যুবদল নেতা মোঃ জসিম সরদার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন জসিমের উপর অতর্কিত হামলা করে। প্রাণ বাঁচাতে জসিম স্থানীয় মজিদ কসাইয়ের বাড়িতে প্রবেশ করে। আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন জসিম কসাইয়ের বাড়ির গেট ও রুমের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে, মোঃ জসিম সরদারকে বেধরক মারপিট করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। জসিমের দুই পায়ের রগ কেটে ফেলে তারা।
আহত যুবদল নেতা মোঃ জসিম সরদারের মামাতো ভাই সাইফুল ইসলাম পিঞ্জুর বলেন, শুধু মারধরের কারণ জানতে চাওয়ায়, ক্ষিপ্ত হয়ে আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন জসিমকে কুপিয়েছে। ওদের হাত থেকে বাঁচার জন্য জসিম মজিদ কসাইয়ের ঘরের মধ্যে পালিয়েও রক্ষা পায়নি। তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক, আমরা খুলনা থেকে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এর আগে জসিমের ভাগ্নে রাব্বিকে মারধর ও তার মোটরসাইকেল নিয়ে গেছিল আজিম ভূঁইয়া। সেই মোটরসাইকেল এখনও ফেরত দেয়নি আজিম ভূঁইয়ারা।
মারধরের শিকার আজিম খানের স্ত্রী নাদিরা বেগম বলেন, আজিম ভূঁইয়া ও তার লোকজন এর আগেও আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকী দিয়েছে। বুধবার আমার স্বামীকে মেরেছে, মারধরের কারণ জানতে চাওয়ায় জসিম কাকাকে মেরেছে তারা। আজিম ভূঁইয়ার সাথে কয়েল ফারুক, মাসুদ, মুরাদ, অভি, শাওনসহ ১৫-১৬ জন ছিল। আমরা এর বিচার চাই।
এদিকে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় আজিম ভুইয়ার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। আধাঘন্টা মাছ বাজার বন্ধ রাখেন তারা। মাছ ব্যবসায়ী মোঃ ওসমান বলেন, গতকাল জসিমকে মারধর করার পরে আজিম ভুইয়া ও তার লোকজন এসে মাছ ব্যবসায়ী কুটুকে মারধর করেছে। এর আগে গরুর গোশত আব্দুস সালামও আমাদের এক মাছ ব্যবসায়ীকে মারধর করেছে। আমরা ছালাম, আজিম ভূঁইয়া ও সেলিম ভূঁইয়ার বিচার চাই।
এদিকে ঘটনার ২০ ঘন্টা পরেও হামলা ও রগ কাটার ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি আহতের স্বজনরা। কাউকে আটকও করতে পারেনি পুলিশ।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply