নিজস্ব প্রতিবেদক:: আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট। এর আগে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৭-০৮ ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরের বাজেট টেলিভিশন ও বেতারের মাধ্যমে ঘোষণা করেছিলেন।
এ বাজেটে পরিচালন ও অন্যান্য ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংগ্রহ করবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসবে ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।
এ ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪২০ কোটি টাকা।
সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক এই বাজেট চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম বাজেটের আকার আগের চেয়ে কমল।
বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দের চিত্র
সুদ পরিশোধ: ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা
জন প্রশাসন: ১ লাখ ২১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা
প্রতিরক্ষা: ৪১ হাজার ৮০ কোটি টাকা
শিক্ষা ও প্রযুক্তি: ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা
কৃষি: ৪৬ হাজার ৬১০ কোটি টাকা
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ: ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: ২২ হাজার ৯১০ কোটি টাকা
সামাজিক নিরাপত্তা: ৩৭ হাজার কোটি টাকা
মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা
চলতি অর্থবছরের জন্য প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৬ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।
পণ্যে শুল্ক-কর পরিবর্তন: দাম বাড়বে ও কমবে
বাজেট বক্তৃতায় বেশ কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক ও কর বাড়ানো ও কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে বাজারে পণ্যের দামের ওপর প্রভাব পড়বে।
বাজেটে দাম বাড়বে
সিগারেট
লিপস্টিক
প্লাস্টিক পণ্য
সুতা
রাস্তার উপকরণ (রোড মেটেরিয়ালস)
ওটিটি (OTT) সেবা
আমদানিকৃত এলইডি লাইট ও অনলাইন কেনা ব্লেড, কৃত্রিম আঁশ
দাম কমবে
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এয়ার কন্ডিশনার
স্যানিটারি ন্যাপকিন
প্যাকেটজাত তরল দুধ
চিনি
বল পয়েন্ট কলম
জমির নিবন্ধন ফি
ইন্টারনেট সেবা
বাস ও মাইক্রোবাস
সরকার আশা করছে, এই বাজেটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখবে।