মনির হোসেন, মোংলা:: দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে মোংলা বন্দরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সুন্দরবনের কোলঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা দেশের এই দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দরটি সারাবিশ্বের সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ 'হাব' হয়ে উঠেছে। বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি, আন্তরিকতা, পৃষ্ঠপোষকতা এবং সংস্থাটির চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমানের নেতৃত্বে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে মোংলা বন্দর।
নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে, নতুন ধরনের পণ্য খালাসের সুবিধা প্রদান করতে আর পণ্য ওঠানামার পাশাপাশি সেবার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে তিলে তিলে নতুন মাত্রায় গড়ে তোলা হচ্ছে মোংলা বন্দরকে। আজকের মোংলা বন্দর বিগত দিনের চেয়ে আরও বেশি কর্মক্ষম এবং আগামীর মোংলা বন্দর হতে যাচ্ছে আরও আকর্ষণীয়, আরও সমৃদ্ধ এবং আরও বেশি কার্যকর।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের সক্ষমতা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন নির্গমনের ক্ষেত্রে মোংলা বন্দর শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বন্দরে মোট ৮৩০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়েছে। বন্দরের ইনারবারে ড্রেজিং এবং নতুন জেটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বিদেশি জাহাজের আগমন আরো বাড়বে। এছাড়াও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়। এ অর্থবছরে মোট কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০৪ কোটি ১২ লাখ মেট্রিকটন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বাড়াতে এবং আমদানি রপ্তানি আরো গতিশীল করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্প দুটি হল ৬টি জেটি নির্মাণ ও ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্প। এই ৬টি জেটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরে কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বাড়াতে ৬টি জেটির মধ্যে দুটি নতুন জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই জেটি দুটি নির্মিত হলে বন্দরের চাপ কমবে এবং একইসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। এই দুটি জেটির নির্মাণকাজ এরই মধ্যে ৬৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন কর্তৃপক্ষ । বন্দরের পশুর চ্যানেলের নাব্য সংকট নিরসনে ১৫৩৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ড্রেজিং প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় পশুর চ্যানেলের গভীরতা বৃদ্ধি করে স্বাভাবিক রাখতে ড্রেজিং করা হবে। এর ফলে, বন্দরে বড় জাহাজ চলাচল এবং কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আরো বাড়বে।