মনির হোসেন, মোংলা:: মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেছেন, দেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করতে মোংলা সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই। দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লে এমনকি ব্যবসায়ীরা এ বন্দর ব্যবহার করলে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারবো।
বন্দরের সক্ষমতা এবং কিভাবে এই বন্দর এগিয়ে নেওয়া হবে সে বিষয়ে রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মোংলা বন্দরে বছরে ১৫০০ জাহাজ নোঙর করতে পারলেও এখন সেখানে ৮৩০টি জাহাজ আসছে। তার মানে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। অথচ এই বন্দর ব্যবহার করলে কনটেইনার জটে পড়তে হয় না। জেটি ও শেডগুলো প্রায় সময়ই খালি থাকে। তাই আমদানি-রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা মোংলা বন্দর ব্যবহারে উৎসাহিত হন। দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী, আমদানি-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী, শিপিং এজেন্ট ও বন্দর ব্যবহারকারীদের পারষ্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে মোংলা বন্দর তথা দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বন্দর চেয়ারম্যান।
তিনি আরো বলেন, মোংলা বন্দরের উন্নয়নে এরই মধ্যে চীনের সহযোগিতায় কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নতুন ২টি জেটি ও ২টি ইয়ার্ডসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি বন্দরে সংযোজন করা হয়েছে। ফলে বন্দরের সেবার মান বাড়ছে। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে।
মোংলা বন্দরের উন্নয়নে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এমনটা জানিয়ে বন্দরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর নদীর ড্রেজিং কার্যক্রম পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। এটি সম্পন্ন হলে বন্দরে বড় জাহাজ সহজেই ভিড়তে পারবে। কম খরচে এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে পণ্য আমদানি রপ্তানিসহ সব ধরনের সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দরের উন্নয়নে আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে যা পরবর্তীতে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করে দেশকে সামনের দিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের সক্ষমতা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন নির্গমনের ক্ষেত্রে মোংলা বন্দর শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বন্দরে মোট ৮৩০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভিড়েছে। বন্দরের ইনারবারে ড্রেজিং এবং নতুন জেটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বিদেশি জাহাজের আগমন আরো বাড়বে। এছাড়াও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়। এ অর্থবছরে মোট কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০৪ কোটি ১২ লাখ মেট্রিকটন। রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৪৩ কোটি টাকা।