পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি:: খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটির কালিনগর ওয়াপদার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভদ্রা নদীর প্রবল স্রোতে প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় ২২নং পোল্ডারের ১৩ গ্রামের হাজারো মানুষ চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে শত শত মানুষ বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ত্রাণ নয়, আমাদের টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।”
দেলুটি হচ্ছে উপজেলার দ্বীপবেষ্টিত একটি ইউনিয়ন। বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলার সীমান্তবর্তী এ ইউনিয়নের ২২নং পোল্ডারটি ৫টি ওয়ার্ডের ১৩টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। এখানে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। তরমুজসহ বিভিন্ন কৃষি ফসল উৎপাদনের জন্য এ পোল্ডারটি সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হলেও দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণে স্থানীয়রা সবসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে বসবাস করছেন।
উল্লেখ্য,গত বছরের ২২ আগস্ট একই এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে পুরো ২২নং পোল্ডার প্লাবিত হয়। দীর্ঘদিন পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছিল স্থানীয়দের। আশ্রয়কেন্দ্রের অভাবে হাজারো মানুষকে রাস্তার পাশে দিন কাটাতে হয়েছিল। গত ২০ বছরে অব্যাহত ভাঙনে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও অসংখ্য ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে বর্তমানে কালিনগর সাধুঘাটের অমল কবিরাজের বাড়ি থেকে প্রভাষ মণ্ডলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধে ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে নতুন করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর দাবি—অবিলম্বে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ জরুরি।
এমতাবস্থায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজের সভাপতিত্বে ও ইউপি সদস্য পলাশ কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সমরেশ হালদার, ইউপি সদস্য রামচন্দ্র টিকাদার, রিংকু রায়, বদিউজ্জামান, মেরি রাণী, জামায়াত নেতা মোস্তফা সরদার, প্রভাষক কল্যাণ মণ্ডল, ধীমান মণ্ডল, দ্বিজেন্দ্র নাথ মণ্ডল, সন্তোষ গাইন, উৎপল রায়, শিশির মণ্ডল, শিমুল মণ্ডল, মিহির সরকার, শ্যামল কান্তি রায়, মালতী মণ্ডল, শিক্ষার্থী পিয়া মণ্ডল ও তৃপা সরকারসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, প্রতিবার ভাঙন হলে আমরা ত্রাণ পাই, কিন্তু টেকসই বেড়িবাঁধের ব্যবস্থা করা হয় না। আমরা চাই স্থায়ী সমাধান।