ক্রীড়া প্রতিবেদক:: পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় দিয়ে নারী বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ। বোলারদের তোপে মাত্র ১২৯ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট হাতে আত্মবিশ্বাসী ইনিংসে রুবাইয়া হায়দারের ঝলমলে ফিফটির ওপর ভর করে ১১৩ বল হাতে রেখে সহজ জয় তুলে নেয় বাঘিনীরা।
কলম্বোতে প্রথমে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান শুরুতেই ধাক্কা খায়। ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুই উইকেট তুলে নেন মারুফা আক্তার। এরপর নাহিদা আক্তার ও রাবেয়া খানের ঘূর্ণিতে আরও চাপে পড়ে পাকিস্তান। পুরো দল ৩৮.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ১২৯ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৩ রান আসে রামিন শামিমের ব্যাট থেকে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দৃঢ়তায় এগোয় বাংলাদেশ। ওপেনার রুবাইয়া হায়দার অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ৩১.১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দেখে-শুনে খেলার চেষ্টা করেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফারজানা হক। ১৭ বল খেলে ২ রান করেন তিনি। তার বিদায়ে ৭ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে ব্যর্থ হন শারমিন আক্তার; তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ রান।
৩৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২ রান যোগ করেন ঝিলিক। ২৩ রান করে জ্যোতি বিদায় নিলে ভাঙে সেই জুটি।
বাকি কাজটা সুবহানা মোস্তারিকে সঙ্গে নিয়ে সহজেই শেষ করেন ঝিলিক। দারুণ ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে অভিষেকেই করেছেন ফিফটি, সেটাও আবার বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। সবমিলিয়ে ৭৭ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন তিনি। এ ছাড়া ১৯ বলে অপরাজিত ২৪ রান আসে মুস্তারির ব্যাট থেকে।
এর আগে বল হাতে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন মারুফা। ডানহাতি এই পেসারের সুইং আর গতিতে চোখে সর্ষে ফুল দেখেছেন পাকিস্তানি ব্যাটাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ডাবল স্ট্রাইক করেন মারুফা। পঞ্চম বলে ওমাইমা সোহেলকে বোল্ড করেন তিনি। পরের বলেই ফর্মে থাকা সিধরা আমিনের স্টাম্প ভাঙেন এই পেসার। দুই ব্যাটারই ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন।
২ রানে ২ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মুনিবা আলি ও রামিন শামিম। বড় হতে থাকা এই জুটি ভাঙেন নাহিদা আক্তার। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৫ বলে ১৭ রান করেন মুনিবা। শামিমকেও ফিরিয়ে দেন নাহিদা। এই বাঁহাতি স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৯ বলে ২৩ রান করেন শামিম।
দলীয় ফিফটির আগেই ৪ উইকেট হারানো পাকিস্তানের বিপদ বাড়ান সিধরা নাওয়াজ। ২০ বলে ১৫ রান করা এই মিডল-অর্ডার ব্যাটারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন রাবেয়া।
এরপর লোয়ার মিডল-অর্ডার ব্যাটাররা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ফাতিমা সানা ও নাটালিয়া পারভেজরা উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফাতিমা ৩৩ বলে ২২ রান করেন। শেষদিকে ডায়ানা ২২ বলে অপরাজিত ১৬ রান করলেও দেড়শর আগেই অলআউট হয় পাকিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে ৫ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার হন স্বর্ণা। এ ছাড়া মারুফা ও নাহিদা নেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন নিশিতা নিশি, রাবেয়া খান ও ফাহিমা খাতুন।