বিনোদন ডেস্ক:: পারিবারিক ব্যবসায় পার্টনার করার কথা বলে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও হুমকির অভিযোগে করা মামলায় সম্প্রতি জামিন নিয়েছেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছিল।
চলমান আলোচনার মধ্যেই সোমবার সকালে মেহজাবীন তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি পুরো ঘটনাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন এবং অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই বলে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
সম্প্রতি আমিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মেহজাবীন ও তার ভাই আলিসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে এই মামলা করেন। আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ১০ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তারা ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এই খবরের পরিপ্রেক্ষিতে মেহজাবীন তার বিবৃতিতে জানান, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে দায়ের করা এই মামলা সম্পর্কে তিনি গত ৯ মাসে কিছুই জানতেন না। কারণ, অভিযোগকারী তার সঠিক ফোন নম্বর বা ঠিকানা পুলিশ বা আদালতকে দেননি। তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে খণ্ডন করেছেন।
আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই উল্লেখ করে মেহজাবীন বলেন, ‘অভিযোগকারী দাবি করেন ২০১৬ সাল থেকে আমার সাথে ‘ব্যবসা’ করছিলেন। কিন্তু তিনি একটি মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বরে পাঠানো উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও দেখাতে পারেননি।’
আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি (অভিযোগকারী) ২৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার দাবি করলেও কোনো ব্যাংক লেনদেন, চেক, বিকাশ লেনদেন, লিখিত চুক্তি, রশিদ বা কোনো সাক্ষীর প্রমাণ দেখাতে পারেননি। একটি কাগজপত্রও নেই।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারা ১৬ মার্চ হাতিরঝিল রোডের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলেন। ওইদিন ঘটনাস্থলে গেলে মেহজাবীন ও তার ভাইসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি মেহজাবীন ও তার ভাই বাদীকে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন। হাতিরঝিলে ডেকে আনার ঘটনা ‘সম্পূর্ণ প্রমাণহীন’ উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, ‘অভিযোগকারী দাবি অনুসারে, ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেঁধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম... গত নয় মাসে তিনি রেস্টুরেন্ট বা রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ বা কোনো সাক্ষী দেখাতে পারেননি। হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর একটি।’
গত নয় মাসে কোনো আইনি নোটিশ পাননি বলেও স্পষ্ট করেন মেহজাবীন। বলেন, ‘কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল বা কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট পাইনি। একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগে থেকেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম।’
মেহজাবীন এও জানান, মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর পেয়েই তিনি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছেন, কারণ তিনি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
‘মিডিয়া ট্রায়াল’ না করার অনুরোধ জানিয়ে মেহজাবীন বলেন, ‘প্রমাণ ছাড়া দায়ের করা মামলা কখনো সত্য হয়ে যায় না। সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এখনকার দিনে কাউকে অপমান করা, মানহানি করা বা ভাইরাল হওয়ার জন্য অন্যকে ব্যবহার করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যক্তির যেই উদ্দেশ্যই থাকুক, আমার বা আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে সে যা-ই করতে চায়- আমি বিশ্বাস করি সবকিছু খুব দ্রুতই পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অভিযোগকারী ও তার আইনজীবীর ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে- বলেও জানান মেহজাবীন।
১৫ বছরের ক্যারিয়ারের পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে লেখেন, ‘এই পরিশ্রমের পরেও আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে- এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক।’