স্পোর্টস ডেস্ক:: মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার যেনো ছিল উৎসবমুখর এক সকাল। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নামার আগেই টিম টাইগার এবং দর্শকদের চোখ ছিল এক বিশেষ মানুষকে ঘিরে-মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘ দেড় যুগের পথচলার পর দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে পা রাখলেন শততম টেস্টে। আর সেই মাইলফলকের দিনে ব্যাট হাতে তিনি খেললেন ক্যারিয়ারের অন্যতম নিখুঁত ও পরিপক্ব ইনিংস। তবে দিনের শেষে তার স্কোরবোর্ডে লেখা থাকলো ৯৯ একটি রান যেন পুরো দেশের অপেক্ষা দীর্ঘ করল আরও এক রাত।
তার আগে সকালে ম্যাচ শুরুর আগেই মুশফিককে সম্মান জানাতে আয়োজন হয় সংক্ষিপ্ত হলেও আবেগঘন এক অনুষ্ঠান। প্রথম টেস্টের অধিনায়ক হাবিবুল বাশার তার হাতে বিশেষ ক্যাপ পরিয়ে দেন। পরে বিসিবি সভাপতি ও দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল তুলে দেন স্মারক ক্রেস্ট। মুশফিকের পরিবার, অভিষেক টেস্টের সতীর্থেরা—সবাই মিলে মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে তুলেন।
টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তে শুরুটা হয় আশাব্যঞ্জক। সাদমান ইসলাম এবং মাহমুদুল হাসান জয় মিলে প্রথম ঘণ্টা কাটিয়ে দেন অনায়াসে। তবে বিরতির ঠিক আগেই এলবিডব্লিউ-এর ফাঁদে পড়ে ফেরেন সাদমান (৩৫)। বেশি সময় টিকতে পারেননি জয়ও-ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন তিনি (৩৪)।
অধিনায়ক শান্তও আলো ছড়াতে পারেননি। লাঞ্চের আগে ম্যাকব্রাইনকে ছক্কা হাঁকানোর পরপরই বোল্ড হয়ে ফিরে যান। ফলে প্রথম সেশনেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে পড়ে যায় তিন উইকেট।
লাঞ্চের পর খেলার গতিপথ পাল্টাতে শুরু করেন মুমিনুল হক। দু-দুবার জীবনের সুযোগ পেলেও সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়ে তোলেন তিনি। ম্যাকব্রাইনের শিকার হওয়ার আগে মুমিনুল খেলেন পরিপক্ব ৬৩ রানের ইনিংস।
অপরদিকে মুশফিক তার শততম টেস্টকে নিজের মতো করেই সাজাচ্ছিলেন। উইকেট পতনের চাপ সামলে, শট নির্বাচন আর ধৈর্য সব মিলিয়ে গড়ে তোলেন এক অনন্য ইনিংস। কেবল এক রান দূরে দাঁড়িয়ে আছেন আরও এক ঐতিহাসিক কৃতিত্বের: শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করা ১২তম ব্যাটার হওয়ার সুযোগ।
দিনের শেষ ঘণ্টায় লিটন দাস এগিয়ে গিয়ে মুশফিককে প্রয়োজনীয় সঙ্গ দিয়েছেন। দিনের শেষ পর্যন্ত ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে লিটনও দ্বিতীয় দিনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন।
বাংলাদেশ দিন শেষ করেছে ৪ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে। অপরাজিত-মুশফিকুর রহিম: ৯৯, লিটন দাস: ৪৭। আয়ারল্যান্ডের হয়ে একাই চার উইকেট শিকার করেছেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।