ডেস্ক:; বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এ পরিস্থিতিতে তাকে দেখতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরছেন এমন গুঞ্জন সারাদিন ধরে ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রায় ১৭ বছর ব্রিটেনে অবস্থানের পর তার ফিরে আসার খবর ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা।
বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক সূত্র দাবি করেছে, তিনি সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে রওনা দিয়েছেন। এমনকি দোহা হয়ে ঢাকায় পৌঁছানোর প্রস্তুতিও চলছে বলে উল্লেখ রয়েছে কিছু যাত্রী তালিকার তথ্যে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি বা সংশ্লিষ্ট কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি তা এখনো নিশ্চিত করেননি।
এরই মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এভারকেয়ার হাসপাতালে নজিরবিহীন নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তিন স্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। জানা গেছে, ভিড় এড়াতে বিশেষ পরিস্থিতিতে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজনীয় মহড়াও পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী।
বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতারা বলছেন, তারেক রহমান দেশে ফিরবেন এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত, কিন্তু সুনির্দিষ্ট তারিখ জানাতে ‘কৌশলগত কারণ’ দেখানো হচ্ছে। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন। তবে সঠিক দিন-তারিখ তিনি জানাননি। একইভাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলও বলেছেন, তার দেশে আসায় কোনো বাধা নেই।
আইন উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরায় আইনি বাধা নেই এবং তিনি ফিরলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য, দলের উচ্চপর্যায়ের প্রস্তুতি এবং গুলশানের দলীয় কার্যালয়ে নীরব তৎপরতা সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এ সপ্তাহেই তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতির কারণে সরকার তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে এবং তার নিরাপত্তায় এসএসএফ নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বহুদিন ধরে হৃদযন্ত্র, কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও চোখসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর বুকে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্য থেকে চার সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম ঢাকায় এসে কাজ শুরু করেছে। লিড কনসালট্যান্ট ড. রিচার্ড বিলের নেতৃত্বে দলটি সিসিইউতে গিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে এবং স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে পরবর্তী মেডিকেল পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় অংশ নেয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে লন্ডনে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যান তারেক রহমান। দীর্ঘ সময় সেখানে অবস্থানের মধ্যে বহু মামলা চললেও সাম্প্রতিক আইনি প্রক্রিয়ায় সবগুলো থেকে মুক্তি পান তিনি। রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর তার দেশে ফেরাকে ঘিরে এখন নতুন আলোচনার জন্ম হয়েছে।