
মনির হোসেন, মোংলা:: ৭ ডিসেম্বর। মোংলা ও সুন্দরবন মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে এ এলাকা শত্রুমুক্ত করেন।
মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম শেখ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর এম.এ জলিল, সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও কবির আহমেদ মধুর নেতৃত্বে ৭ ডিসেম্বর মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন এলাকা সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত হয়। তখন সুন্দরবনে স্থাপিত পাঁচটি ক্যাম্পে সেনা কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে দামাল ছেলেদের দেওয়া হতো প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা সেখান থেকে সুবিধা মতো আক্রমণ চালাতেন মোংলা, মোড়লগঞ্জ, রামপাল, শরণখোলা ও পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকার পাক বাহিনীর ক্যাম্পগুলোতে। এছাড়া ওই সময়ে মোংলা বন্দরের পশুর নদীতে থাকা পাক হানাদার বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ এম.ভি মাকরনও ধ্বংস করা হয়।
আবুল হাসেম শেখ আরও বলেন ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক হানাদাররা নৃশংস গণহত্যা চালায় এ এলাকার নিরীহ মানুষের উপর। এখনো সেই গণহত্যার স্মৃতি বহন করছে মোংলার দামেরখন্ড ও রামপালের ডাকরার বধ্যভূমি। আমরা যারা ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিলাম তাদের নেতৃত্বে ছিলেন সুন্দরবন অঞ্চলের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ। মেজর জিয়া, মুক্তিবাহিনী ও নৌ কমান্ডের ত্রিমাত্রিক আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক সেনারা। পশুর নদীতে পাক বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ মাকরনে মাইন বসিয়ে তা ডুবিয়ে দেয় মুক্তি নৌ কমান্ডের সদস্যরা। এরমধ্য দিয়েই ৭ ডিসেম্বর পুরোপুরি হানাদার মুক্ত হয় মোংলা ও সুন্দরবন।
স্বাধীনতার অনেক পরে মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষ থেকে পৌর পার্ক এলাকায় নির্মিত হয়েছে একটি যুদ্ধ জাহাজ সংবলিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও আরেকটি বিজয় স্তম্ভ।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ১৯৭১ সালের দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতার যুদ্ধে মোংলা পোর্ট পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের মোট ২৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
Leave a Reply