ডেস্ক:: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তবে কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্য দেখা দিলেও, তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
শনিবার বিকেলে এভারকেয়ার হাসপাতালে হাদীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড এসব তথ্য জানায়।
এর আগে সকালে হাদির চিকিৎসায় ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, হাদিও কনসাচ লেভেল পনেরোর মধ্যে আছে তিন। এটি একেবারেই সর্বনিম্ন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর (আইসিইউ ও এইচডিইউ) ডা. মো. জাফর ইকবাল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাদির মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সকল সাপোর্ট চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে পুনরায় ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। ফুসফুসে ইনজুরি বিদ্যমান রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা আপাতত চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস প্রতিরোধের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ব্রেন স্টেম ইনজুরির কারণে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের ওঠানামা করছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে তা চলমান থাকবে। হৃদস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
কোনও ধরনের ভিজিটর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে, অপ্রয়োজনে হাসপাতালে ভিড় না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। কোনও ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে, রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য এই মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন নিউরো অ্যানেস্থেশিয়া ও আইসিইউর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, নিউরোসার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জিল্লুর রহমান, কার্ডিওলজির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এ কে এম রেজা, নেফ্রোলজির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মাসুম কামাল খান, রেসপিরেটরি মেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জিয়াউল হক, নিউরোমেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. খন্দকার মাহবুবুর রহমান, ডা. এস এম হাসান শাহরিয়ার, কার্ডিওথোরাসিক সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জুলফিকার হায়দার, বক্ষব্যাধি সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. শাহিনুর রহমান, অর্থোপেডিক্সেও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আতিয়ার রহমান, নাক-কান-গলার সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. একরাম উদ্দৌলা ও হেমাটোলজির কনসালটেন্ট ডা. কাজী স্মিতা হক।
সার্বিক তত্ত্বাবধান রয়েছেন এভারকেয়ারের ডিএমএস ডা. আরিফ মাহমুদ ও প্রাইমারি কনসালটেন্ট ডা. আলিউজ্জামান।