নিজস্ব প্রতিবেদক:: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি (ওসমান হাদি) হত্যাকাণ্ডের কঠোর বিচার নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ ভাষণে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই নৃশংসতার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখাবে না।
শহীদ ওসমান হাদিকে ‘প্রতিবাদের আইকন’ হিসেবে অভিহিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিপ্লবী রক্তে উজ্জীবিত এই তরুণ নেতা তার কর্মের মাধ্যমে দেশপ্রেম, ধৈর্য ও দৃঢ়তার অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তিনি ছিলেন পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তির প্রধান শত্রু। তাঁর কণ্ঠ স্তব্ধ করে বিপ্লবীদের ভয় দেখানোর অপচেষ্টা কখনোই সফল হবে না।”
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন যে, দেশ এখন গণতান্ত্রিক উত্তরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং ওসমান হাদি ছিলেন এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বলেন, “হাদির ইচ্ছা ছিল ঢাকা-৮ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখা। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায় এখন সমগ্র জাতির। আমাদের সবাইকে ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে যাতে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের শত্রুদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা যায়।”
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখুন। কোনো ধরনের অপপ্রচার বা গুজবে কান দেবেন না। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকাই হবে শহীদ হাদির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।” তিনি আশ্বস্ত করেন যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত কাজ পরিচালনা করছে।
পরিশেষে প্রধান উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন যে, রাষ্ট্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভয়, সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাতের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে কেউ রুখতে পারবে না। শহীদ হাদির আদর্শ ও ত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করে একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।