সাহারুল ইসলাম ঘোড়াঘাট দিনাজপুর প্রতিনিধি:: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদের সমারোহ। এ যেন প্রকৃতির হলুদ রঙ্গের গালিচা। সকালের কুয়াশা ভেজা শিশির ও সূর্য উকি দেয়ার সাথে সাথে মৌমাছির মধুর গুঞ্জনে আনন্দ-উল্লাস বাড়িয়ে দেয় প্রকৃতিপ্রেমীদের। এক ফুল থেকে আরেক ফুলে মধু সংগ্রহের কাজে ছোটাছুটি করে মৌমাছিরা।
দিনাজপুর জেলা ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে গ্রামে সরিষার মৌসুমে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সরিষা আবাদের পাশাপাশি মধু সংগ্রহ করতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন মৌ চাষিরা। সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের চোখে মুখে আনন্দের আভা। রোপা আমন কাটার পর বোরো আবাদের মাঝামাঝি সময় করা হয় সরিষার আবাদ।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন , চলতি মৌসুমে প্রায় এক হাজার একর জমিতে সরিষা আবাদ করেছে কৃষকরা যা দু’বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি। সরিষার জাতগুলোর মাঝে বারী-১৪,১৭,১৮,১৯, বিনা-৯, আবাদ হয়েছে। কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল বারী-১৪ জাতের সরিষা বেশি আবাদ করেছেন। বেশি হারে ফলন ছাড়াও বারী-১৪ জাতের সরিষার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি বলে জানা যায়।
এদিকে, উপজেলার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড দক্ষিণ নয়াপাড়া ও ঘোড়াঘাট
ইউনিয়নের গ্রাম অঞ্চলে বিস্তৃত মাঠজুড়ে এখন সরিষার হুলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে, যে দিকে চোখ যায় শুধু হুলুদের সমারোহ। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন হওয়ার আশায় কৃষকরা খুবই খুশি। সরিষার পাতা থেকে জৈব সার তৈরি হয় এবং জমির উর্বতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী ফসল আবাদের সময় সার ও কীটনাশক কম লাগায় সরিষার আবাদ কৃষকের কাছে সমাদৃত। এলাকার উৎপাদিত সরিষার তেল এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায়
সরবরাহ করে অর্থনৈতিকভাবে বিশেষ অবদান রেখে আসছে।
ঘোড়াঘাট উপজেলার দক্ষিণ নয়াপাড়ার গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান জানান, এবার সরিষার ফলন গতবারের তুলনায় ভালো হবে আশা করছি । আগাম সরিষার বাজারদরও বেশি। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ সরিষার ফলন ঘরে তুলতে পারবেন। তিনি বলেন সার ও বীজ এর দাম বাড়ায় ফলন ভালো হলেও খুব বেশি লাভের দেখা যাবে না।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুজ্জামান জানান, সরিষা ফসলের আবাদে কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হয়ে থাকে। এবারে বেশ ভালো ফলন হবে আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ থেকে এ বছর উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের মাঝে উন্নত জাতের সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।