1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন

বিপুল পরিমান নগদ টাকাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুই প্রকৌশলী আটক

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আলমগীর হোসেন( পাবনা জেলা) প্রতিনিধি:: পাবনায় বিপুল পরিমান নগদ টাকাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুই প্রকৌশলীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঠিকাদারের সাথে অবৈধ টাকা লেনদেনের অভিযোগে তাদের কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান ঠিকাদার রাজিব ও কনকসহ কয়েকজন। অভিযোগে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডর ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাবনা কার্যালয়ে যান সংবাদকর্মীরা। এসময় তথ্য ও বক্তব্যের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানার কক্ষে গেলে ওই কক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ পান। কয়েকবার নক দেবার পর মাসুদ রানা দরজা খুললে ঠিকাদার আরিফুজ্জামান রাজিব কমিশনার ও পানি
উন্নয়ন বোর্ডের এসডি মোশাররফসহ কয়েকজনকে দেখতে পান সংবাদকর্মীরা। এসময় টেবিলে বিপুল অর্থও দেখা যায় এবং এরপরই আরেক ঠিকাদার কনক সেখানে হাজির হন।সরকারি অফিসে ঠিকাদারের সঙ্গে বন্ধ কক্ষে কিসের অর্থ লেনদেন হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তারা। বিষয়টি সন্দেজনক মনে হওয়ায় পুলিশকে জানান ওই সাংবাদিকরা। পুলিশ এসে পৌঁছানোর আগেই দুই ঠিকাদার পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে দুই প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) খবর দেয়। সেখানেই দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদেও কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন দুদক ও পুলিশ কর্মকর্তারা। পরে সন্ধ্যার দিকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ দিকে দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় তাদেরকে পাউবো কার্যালয় থেকে পাবনা সদর থানায় নেওয়া হয়। আটককৃতরা হলেন, পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ রানা (২৯)। সে দাপুনিয়া ইউনিয়নের টিকশাইল গ্রামের মিনহাজুল ইসলামের ছেলে এবং কুমিল্লার মেঘনা থানার শিবনগরের আনোয়ার হোসেনের ছেলে ও পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন (৪২)। জানা গেছে, রাফি কন্সট্রাকশনের স্বত্ত্বাধিকারি ঠিকাদার আরিফুজ্জামান রাজিব কমিশনার এবং ঠিকাদার কনকের প্রতিষ্ঠানের নামে এসব টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। এসব তদন্তে অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তানভীর আহমেদ দীপ নামে পাউবোর এক ঠিকাদার বলেন, আটক দুইজন হয়তো ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারেন। কারণ তারা মাত্র কয়েকমাস এখানে আসছেন। এতো দ্রুত এসব টাকা লেনদেন করবে এটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। কোনো ঠিকাদার তাদের কাছ থেকে সুবিধা মতো কাজ (প্রকল্প) না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসিয়েছে। আনিছুর রহমান মারুফ নামে আরেক ঠিকাদার বলেন, প্রত্যেক কাজে অফিসের কর্মকর্তাদের বিশেষ কমিশন দিতে হয়। কাজের শুরু থেকে ধাপে ধাপে এসব টাকা দিতে হয়। না দেওয়া হলে কাজের বিল আটকে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, ঘটনাটি আমরা জানতে পেরেছি। দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখছেন। কোথাকার টাকা, কিভাবে লেনদেন হলো সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাবনার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ রওশন আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত কওে বলেন,পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ ভাই আমাদের ফোন করে জানান যে সেখানে ঘুষের টাকা লেনদেন হচ্ছে। এমন সংবাদ পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকাসহ মোশারফ হোসেন ও মাসুদ রানা নামে দুই কর্মকর্তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে বুধবার সকালে ৫৪ ধারা মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। টাকার উৎস অনুসন্ধানসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর বিষয়ে দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ বিষয়ে দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
Theme Customized By BreakingNews