পাইকগাছা প্রতিনিধি :: উপকূলের পাইকগাছায় বর্ষা মৌসুমে মাচায় সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাচা ব্যবহারের কারণে সবজির লতা ও ফল মাটিতে লেগে থাকে না, ফলে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। মাচায় চাষ করার কারণে ফসল পরিষ্কার থাকে এবং সহজে সংগ্রহ করা যায়। মাচায় আবাদ করা সবজি বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় আর্ধিকভাবে লাভবান হচ্ছে চাষীরা।
মাচায় সবজির আবাদ বলতে সাধারণত, লাউ, চিচিঙ্গা, পল্লা, জিঙ্গে, কুমড়া, শসা, বরবটি, সিম ইত্যাদি সবজি লতানো গাছের জন্য মাচা তৈরি করে চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে,গাছের লতা উপরে উঠে যায় এবং এর ফলে ফলন বাড়ে, পোকামাকড়ের আক্রমণ কমে এবং জায়গা সাশ্রয় হয়। মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে ফলন সাধারণত বেশি হয়।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, পাইকগাছায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। নিচু জমি, বাড়ীর আঙ্গিনায়, জমির আইলে ও মাচায় সবজি চাষ করা হচ্ছে। পানির মধ্যে মাচায় সবজি চাষ পদ্ধতি একটি উদ্ভাবনী ও টেকসই কৃষি পদ্ধতি। মাচায় সবজির আবাদ একটি বিশেষ পদ্ধতি, যেখানে সবজির লতানো ও ঊর্ধ্বমুখী বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে মাচা তৈরি করে সবজি চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাধারণত লাউ, কুমড়া, শসা, সিম, বরবটি ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়। মাচা তৈরির ফলে সবজির লতা উপরে উঠে যায় এবং আলো বাতাস ভালোভাবে চলাচল করতে পারে, যা ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক। এছাড়াও, মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হয়।
মাচা তৈরির জন্য সাধারণত বাঁশ, কাঠ বা লোহার পাইপ ও নেট জাল ব্যবহার করা হয়। সবজি চাষে বিভিন্ন প্রকার মাচা তৈরি করা হয়। ফসলের ধরনের উপর মাচা তৈরির উচ্চতা নির্ভর করে। কিছু সবজির জন্য ৫-৬ ফুট উচ্চতার মাচা তৈরি করা হয়, আবার কিছু সবজির জন্য ঝুলন্ত মাচা তৈরি করা হয়। মাচা তৈরির পর সবজির লতা মাচার উপর ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, মাচায় সবজি চাষ একটি লাভজনক এবং পরিবেশ-বান্ধব কৃষি পদ্ধতি। এটি কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদনে সহায়তা করে। মাচায় সবজি চাষ করলে বৃষ্টির সময় গাছের ক্ষতি হয় না এবং ফলও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে। অল্প পরিশ্রমে মাচায় সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে সাবলম্বি হচ্ছে।
Leave a Reply