বেনাপোল প্রতিনিধি::আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৮৫-যশোর-১ শার্শা আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় ভোটারদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসাহ ও আনন্দ। এ আসনে বিএনপি’র চার জন মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকার প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমাবেশ মিছিল মিটিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

৮৫-যশোরের-১ শার্শা আসনের ১১টি ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ১০২টি। এ আসনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৪০ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৮৩ জন।

বিএনপি’র পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলের সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি। তিনি এলাকায় গনসংযোগ শুরু করেছেন্। সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। তিনি এবারের জাতীয় নির্বাচনে ৮৫-যশোর-১ শার্শা আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি শার্শা আসন থেকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য শার্শার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছুটে বেড়াচ্ছেন। নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল মিটিং ও পথ সভা করছেন।

নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছেন শার্শা উপজেলা বিএনপি’র আর এক নিবেদিত প্রাণ তরুন রাজণীতিবিদ শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন। তিনি দলপ্রিয় ও বেনাপোলবাসীর সুপরিচিত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি যশোর-১ শার্শা আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনিও গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নানা ভাবে মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। জেল খেটেছেন ২৫ বার। এই আসনে বিএনপি পক্ষে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় এখনও এগিয়ে আছেন যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক তরুন রাজনীতিবিদ ২৫টি রাজনৈতিক মামলায় আক্রান্ত ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতা নুরুজ্জামান লিটন। বিগত দিনে বিভিন্ন দল থেকে শার্শা, নাভারণ ও বাগআঁচড়াবাসি সংসদ সদস্য পেলেও বেনাপোলবাসি সহ শার্শার মানুষ স্বাধীনতার পর থেকে সংসদ সদস্য পায়নি। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার অবস্থান অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন। এবং জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছে। বিগত সরকারের আমলে হামলা-মামলা ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের আগলে রেখেছেন তিনি। মামলার শিকার গরীব অসহায় ও অন্যান্য নেতা-কর্মীদের জামিন করানোর পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য করেছেন। দুঃসময়ে দলের পাশে থেকেছেন সব সময়। এবারের নির্বাচনে বেনাপোলসহ শার্শাবাসীর দাবি নুরুজ্জামান লিটনই হবে বিএনপি’র প্রার্থী হবেন।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শার্শা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে উপজেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা প্রবীন রাজনীতিবিদ খাইরুজ্জামান মধু। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাছাড়া গত ১৬ বছরে তিনি কখনো কখনো বাড়িতে বাইরে আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে। জেলাখানায় ছিল তার বাড়ি। তিনি এবার এ আসন থেকে বিএনপি’র এমপি নির্বাচন করতে চান। বিএনপি’র মনোনয়ন টিকিট পাওয়ার জন্য নেতা কর্মি ও সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন।

নির্বাচনী মাঠে পিছিয়ে নেই শার্শা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি আবুল হাসান জহির। তিনিও এবার শার্শা আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলের মনোনীত হওয়ার জন্য রাত দিন ছুটে বেড়াচ্ছেন দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মাধুষের কাছে। শার্শা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুল হাসান জহির ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা হয়রানীর শিকার হয়েছেন। কয়েকবার হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন। খেয়েছেন অগণিত মামলা। কয়েকবার জেল ও খেটেছেন তিনি।

তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর ১ শার্শা আসনে এবার জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী থাকায় ফুরফুরে মেজাজে নেতা কর্মীরা। জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান দলের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করছেন। তিনি একজন সৎ ও ধর্মভীরু মানুষ। নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন সকালে দল বেঁধে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ফরম পূরণ করে সদস্য সংগ্রহ করছেন। নারী ভোটাররা ঠিকমতো ভোট কেন্দ্রে গিয়ে যদি ভোট দিতে পারেন তাহলে এ আসন জামায়াত পাবে বলে তাদের বদ্ধমূল ধারণা।

এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঝে মাঝে মিছিল ও জনসমাবেশ করে তাদের নির্বাচনী মাঠ গরম করছেন। তবে যশোর-১ শার্শা আসনে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দলের কাউকে দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমাদেন দলের প্রধান যেভাবে আমাদেরকে যেভাবে দিক নির্দেশনা দিবেন আমরা সেভাবেই কাজ করবো। আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করার টিকিট দিবেন। আমাদের মধ্যে দলীয় কোন কোন্দল নেই। দল যাকে মনোনয়ন দিবেন আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো।