নিজস্ব প্রতিবেদক:: জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতাদের নিউইয়র্কের জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সেখানে বসবাসরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা হেনস্তার ঘটনায় আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা—তা বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা দেশের সীমানার বাইরে হোক—কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার গভীর দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারাসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর আওয়ামী সমর্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যমূলক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই নিন্দনীয় ঘটনাটি শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক মর্মান্তিক প্রতিফলন। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বিমানবন্দরে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক নেতাদের সফরের সময় সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। প্রতিনিধি দলটিকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানো হয়। তবে অপ্রত্যাশিত ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দলটিকে বিকল্প পথে যেতে হয়, যা ঝুঁকির পরিস্থিতি তৈরি করে।
অন্তর্বর্তী সরকার জানায়, ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার ও নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি। এর ফলে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঝুঁকির মুখে পড়েন।
ঘটনার পরপরই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ইতোমধ্যেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিনিধি দলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিদেশে প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ও স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় রাখা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের ভেতরে ও বাইরে রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের যেকোনো ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
Leave a Reply