নিজস্ব প্রতিবেদক:: শ্রম আইন, শ্রমিক অধিকার এবং দেশে চলমান সংস্কার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে কূটনীতিক, জাতিসংঘ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। এ সময় রাজনৈতিক নেতারা শ্রম সংস্কার এবং পোশাক শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক নৈশভোজে রাজনৈতিক নেতারা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য শ্রম সংস্কারের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আইএলওর মহাপরিচালকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা শ্রম সংস্কারের বিস্তৃত প্রভাব, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং আন্তর্জাতিক অবস্থান নিয়ে মতবিনিময় করেন।
বাংলাদেশের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের বক্তব্যে পোশাক শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং অব্যাহত শ্রম খাত সংস্কারের প্রতি সমর্থন জানান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পোশাক শিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতের যেকোনো সরকারকে এর প্রবৃদ্ধি ও টেকসইতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি শ্রম সংস্কার এবং আইএলও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেন।
জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াতের বহু নেতাকর্মীর পোশাক শিল্পে সরাসরি অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা এই খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে সহায়ক হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করেন এবং নির্বাচিত হলে তা এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির বর্তমান শ্রম উদ্যোগকে প্রশংসনীয় উল্লেখ করে বলেন, এগুলো শুধু অব্যাহত রাখা নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রশাসনের অধীনে আরও সম্প্রসারিত হওয়া উচিত।
এনসিপির সিনিয়র নেত্রী ড. তাসনিম জারা তার রাজনৈতিক যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করেন। তিনি জানান, একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসেবে আহতদের সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাকে অনিরাপদ শ্রম অনুশীলনের মানবিক মূল্য উপলব্ধি করিয়েছিল।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস সরকারের দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, অর্থবহ ও স্থায়ী শ্রম সংস্কার বাস্তবায়নে সরকার অটল রয়েছে।
Leave a Reply