মনির হোসেন, মোংলা:: ২০০৯ সালের ৩ জুন মোংলা বন্দর দিয়ে সর্বপ্রথম রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি শুরু হয় এবং একই দিনে হকস বে অটোমোবাইলস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ২৫৫টি জাপানি গাড়ি খালাস করা হয়,যা মোংলা বন্দরের গাড়ি আমদানিতে একটি নতুন ইতিহাস তৈরি করে। বন্দরের রাজস্ব আয়ের নতুন দিক উন্মোচিত হয়।
এভাবেই দীর্ঘ ১৭ বছর ধরেই গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড করে যাচ্ছে মোংলা বন্দর। দেশে মোট আমদানির ৭০ শতাংশ গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ায় বন্দর এবং কাস্টম হাউজের রাজস্ব আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। এখন শতভাগ গাড়ি আমদানির পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ৪ বছরে মোংলা বন্দর দিয়ে মোট ৬১ হাজার ৩০৩টি রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। বন্দরের রাজস্ব আয়ের ৫০ শতাংশ আসে গাড়ি আমদানি থেকে। পদ্মা সেতু চালুর পর সারাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মোংলা বন্দরের কার্যকর সংযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে ঢাকার সঙ্গে মোংলার দূরত্ব প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। উন্নত সড়ক যোগাযোগ এবং কম সময়ের কারণে আমদানি করা গাড়ি পৌঁছাতে এখন সময় লাগে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা।
বন্দর কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, চট্রগ্রাম বন্দরে রিকন্ডিশন গাড়িসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। মোংলা বন্দর কোনো মাশুল বাড়ায়নি। আমরা আশা করতে পারি এখন থেকে শতভাগ বিদেশি গাড়ি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে খালাস করতে আগ্রহী হবেন আমদানিকারকরা।
বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান বলেন, চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত মোংলা বন্দরে মোট ৩ হাজার ৪০টি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। জাহাজ জট না থাকা এবং পর্যাপ্ত গাড়ি রাখার জায়গা থাকার ফলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে গাড়ি আমদানি আরও বাড়বে বলে আশা রাখি।
বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, আমরা আমদানিকারকদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিতে পেরেছি বলেই গাড়ি আমদানি বেড়েছে।
তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছি। একই সঙ্গে দ্রুত গাড়ি খালাস, আধুনিক শেড ও ইয়ার্ড নির্মাণ, নিরাপত্তা জোরদার করতে সার্বক্ষণিক টহল এবং সিসিটিভি মনিটরিং চালু করেছি। আশা রাখছি মোংলা বন্দর দিয়ে শতভাগ গাড়ি আমদানি নিশ্চিত করতে পারবো।
Leave a Reply