অরুণ দেবনাথ, ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি:: যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলায় অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে আবাসস্থল ছেড়েছে উপজেলার বিরল কালোমুখো হনুমান। খাবার সংকটে হনুমান দলবেঁধে পাশ্ববর্তী খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে অবস্থান নিয়েছে। খাবারের জন্য তারা হানা দিচ্ছে বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন ফলের বাগানে। ডুমুরিয়া উপজেলার স্থানীয় জনসাধারণ জানান, কখনো বাসাবাড়ির ছাদে, গাছের ডগায়, আবার কখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলবেঁধে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রায় ২/৩ মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ থেকে ৫০টি হনুমান দলবেঁধে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এসব হনুমান দেখছেন শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের নারী-পুরুষ। কেউবা আবার হনুমান দেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন রুটি,কলা ও বিস্কুট নিয়ে। এদিকে হনুমান দেখে অনেকে আনন্দ পেলেও তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। তারা গাছের ফল, মাঠের ফসল নষ্ট করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। হনুমান গাছে উঠে ডালপালা ভেঙে সব ফল নষ্ট করে দিচ্ছে। ডুমুরিয়ার সবজি চাষি আজিজুর রহমান মোড়ল জানান, তার জমিতে ফুল কপি, সিম রোপন করা রয়েছে। হনুমানের হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন।
তার মতো গ্রামের অনেকেই নিজেদের ফল ও সবজি খেত পাহারা দিচ্ছেন।কেশবপুর উপজেলার স্থানীয়রা জানান, উপজেলা পরিষদ, বালিয়াডাঙ্গা, হাসপাতাল ও অফিসপাড়া কেন্দ্রিক এলাকা জুড়ে এই কালোমুখো হনুমানের বসবাস। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হনুমানের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়। তবে প্রজনন বৃদ্ধি পাওয়ায় খাবার সংকট রয়েছে। কেশবপুরের উপজেলার একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান বলেন, উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০টি হনুমান রয়েছে। সরকার তাদের খাবারের জন্য মাসিক ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিলো। তাদের নিয়মিত বরাদ্দের খাবারে কলা, পাউরুটি ও সবজি দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া হনুমান আটকে রাখা যায় না। চারদিকে পানি উঠে যাওয়ায় এখন ওরা শুকনো এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। জানা যায় কেশবপুর উপজেলার অধিকাংশ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানি উপচে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে দলছুট হনুমানের লাফালাফি ও নানা কার্যকলাপ ছেলে-মেয়েদের ভালো লাগলেও বিপত্তি ঘটেছে কৃষকদের কাছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাচ্চা দিয়েছে অন্তত ২০টি মা হনুমান। হনুমানের অত্যাচারে এখন অতিষ্ট তারা। হনুমানের দল নষ্ট করছে ক্ষেতের ফসল। মাঝে মধ্যে মানুষের ওপরও আক্রমণ করছে। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
Leave a Reply