অরুণ দেবনাথ. ডুমুরিয়া. খুলনা প্রতিনিধি:: দেশের প্রধানমন্ত্রী খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে মডেল মসজিদ উদ্বোধনের ৮ মাস পরও সেখানে নামাজ পড়ার ব্যবস্থাই হয়নি। মূল-মসজিদ ভবনের বাহ্যিক অবকাঠামো সম্পন্ন হলেও আনুসাঙ্গিক অনেক কাজই বাকি থাকার পরও সেখানে কাজ বন্ধ।
সরকার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ৬ষ্ঠ পর্যায়ে বিগত ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন, তার মধ্যে ডুমুরিয়া উপজেলা মডেল মসজিদটিও অন্যতম। কিন্তু আজও সেখানে নামাজ পড়া শুরুই হয়নি।
গত মঙ্গলবার সকালে ওই মসজিদের বাস্তব অবস্থা জানতে-দেখতে গেলে মসজিদের সিড়ির মুখ আটকানো থাকলেও খোলা জানালা টপকে ভেতরে ঢুকে দেখলাম, নিচের তলায় ফ্লোরে কোনো টুইলস না লাগালেও, ছাদে কয়েকটি ফ্যান ঝুলছে। কিছু বৈদ্যুতিক তার টানা থাকলেও, কোথাও সুইস-বোর্ড লাগানো হয়নি। আংশিক ভাবে বাথরুম বা ওজুখানা’র কাজ করা রয়েছে। নিচের তলা তথা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কোনো কাজই সম্পন্ন করা হয়নি। তবে কঠের দরজা বা অন্যান্য মালামাল ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দোতলায় মূল-মসজিদের বড় দরজার মুখে বেড়া-মালামাল দিয়ে আটকানো থাকলে বিকল্প উপায়ে ভেতরে ঢুকে দেখা গেলো, রং’র কাজ না করলেও টাইলস বসানো হয়েছে, তবে পরিষ্কার করা হয়নি। ২৭টি ফ্যান ঝুললেও কোথাও সুইস নেই। তবে ভবনের বাইরে রং করা, নকশা(ডিজাইন) লাগালো বা সিড়িতে টাইলস বসানো দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ দেখে অনেকেই গাড়ি থামিয়ে নামাজ পড়তে নেমে থাকেন। কিন্তু ঢোকার সোজা রাস্তা না পেয়ে অনেক ঘুরে খোলা বালির ওপর দিয়ে কষ্ট-করে মসজিদের কাছে যেয়ে জানতে পারনে, সেখানে নামাজ পড়ার মতো অবস্থাই তৈরি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে মসজিদের কেয়ারটেকার নাঈুমল ইসলাম বলেন, উদ্বোধনের পর গত ৮ মাসে এখানে কোনো কাজ হয়নি। উত্তর পাশে খোলা চা’র দোকানদার সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন গাড়ি থামায়ে অনেকেই আমার কাছে আসে যখন শোনে, এখানে নামাজ হয় না, বলতেই আমার লজ্জা লাগে। এলাকাবাসী লিয়াকত আলী আক্ষেপ করে বলেন, কি-আর কবো, এখানে নামাজ না হলেও, যুবক-যুবতিরা বা নতুন দম্পতিরা এসে মসজিদের ওপরে উঠে ছবি তোলে। মোফাজ্জেল ফকির বলেন, এখানে যে অবস্থা আছে, সরকার ইচ্ছে করলি ৭ দিনির মদ্ধি নামাজ পড়ানে সম্ভব।
মসজিদের ঠিকাদার ও খুলনা মহানগর জাপা নেতা শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, এই মসজিদের কাজে বেশ-কিছু বাড়তি উপকরণ ও সংযোগ সড়কের বিষয়টি সিডিউলে না থাকায় আমরা বিপাকে আছি। খুব-শিঘ্রই সে সংকট মিটে যাবে এবং আমরা কাজও শুরু করবো।
তবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার মন্ডল বলেন, ঠিকাদার কেন্দ্রিক কিছু সমস্যা আছে। চলতি জুনের মধ্যেই তা শেষ না হলে, আমরা জুলাইতে অন্যভাবে কাজ শুরু করবো।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, কয়েক মাস ডুমুরিয়াতে এসেছি। পাইকগাছায় থাকাকালে আমি উদ্যোগ নিয়ে সেখানে নামাজ পড়া চালু করেছিলাম। এখানেও যতদ্রুত সম্ভব আমি ইমাম-মোয়জ্জিন নিয়োগ দিয়ে নামাজ পড়া চালু করে দেবো।
Leave a Reply