বেনাপোল প্রতিনিধি:: যশোরের শার্শা উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বেলা তিনটায় বেগম জিয়ার শারিরিক সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শার্শার সাবেক এমপি ও বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি’র অনুসারী নিজামপুর ইউনিয়ন বিএনপি। অনুষ্ঠানের আগেরদিন উপজেলা কৃষকদলের ব্যানারে একই স্থানে সমাবেশের আয়োজনের ঘোষনা দেয় উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক হাসান জহিরের লোকজন। এ ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সকালে তৃপ্তির অনুসারীরা মঞ্চ বানানোর কাজ তদারকি করতে গেলে হাসানের লোকজন তাদের উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারপিট করে, মঞ্চ ভাংচুর করে এবং আতংক ছড়াতে ৭/৮ টি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলাকারীদের বোমা হামলায় জেলা যুবদলের অর্থ সম্পাদক ইমদাদুল হক ইমদা, উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি আল মামুন বাবলু এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শহীদ গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে নাভারন বুরুজ বাগান স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হলে হাসানের লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় তাদের উপর দ্বিতীয় দফা হামলার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে সার্কেল এ এসপি’র নেতৃত্বে বেনাপোল পোর্ট থানা ও শার্শা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। দু’পক্ষের সংঘর্ষের বড় ধরনের আশংকায় সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নেতা জানান, শার্শা উপজেলায় বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি অন্যপক্ষে উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান জহির। দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলছে। মফিকুল হাসান তৃপ্তির অনুসারী শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হক বলেন, ‘আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশের মঞ্চ নির্মাণ করে চেয়ার বসিয়ে রাখি। আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে আবুল হাসান জহিরের লোকজন হামলা করে আমাদের মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁরা ৮ থেকে ১০টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। তাঁদের হামলায় আমিসহ আমাদের তিনজন আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান জহিরকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘আমি গতকাল সোমবার ঢাকায় চলে এসেছি। গতকাল শুনেছিলাম, দুই পক্ষ একই জায়গায় একই সময়ে সমাবেশের উদ্যোগ নিয়েছে। তখন উভয় পক্ষের সমাবেশ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলাম। খায়রুজ্জামান মধু বলেন, ‘বিএনপির ব্যানারে মফিকুল হাসান তৃপ্তি সমাবেশের উদ্যোগ নেন। আমি দলের সভাপতি অথচ আমাকে ওই সমাবেশে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মফিকুল হাসান তৃপ্তির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির আব্বাস বলেন, ‘শার্শায় মফিকুল হাসান ও আবুল হাসান জহিরের নেতৃত্বে দুটি পক্ষ রয়েছে। দুই পক্ষ একই সময়ে একই জায়গায় সমাবেশ ডাকে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় কেউ মামলা দিলে নেওয়া হবে।
Leave a Reply