আন্তর্জাতিক ডেস্ক::ইরানের তৈরি বহুল আলোচিত আত্মঘাতী ড্রোন শাহেদ-১৩৬, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এক ভয়ঙ্কর অস্ত্র হিসেবে পরিচিত, এবার এর অনুলিপি সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী।
পেন্টাগনের অধীনস্থ সংবাদমাধ্যম স্টারস অ্যান্ড স্ট্রাইপস জানায়, মূলত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফেডারেল নথি অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ১৬টি কপি সংগ্রহ করা হবে। ভবিষ্যতে আরও ২০টি যুক্ত করার বিকল্পও রাখা হয়েছে। প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রগুলোর ব্যবহৃত ড্রোন মোকাবিলায় মার্কিন বাহিনীকে প্রস্তুত করতেই এ উদ্যোগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শাহেদ ড্রোন ধীর গতিতে নিচু উচ্চতায় উড়ে, ফলে রাডারে সহজে ধরা পড়ে না। এই বৈশিষ্ট্যই একে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জে পরিণত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ধারণা করছে, প্রশিক্ষণে এসব কপি ব্যবহার করে হুমকি মোকাবিলায় কার্যকরী কৌশল গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
শাহেদ-১৩৬ প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০২১ সালে ইরানের এক সামরিক মহড়ায়। কম খরচে ঝাঁক কৌশল প্রয়োগের সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক রফতানি একে ‘অসম যুদ্ধের’ এক কার্যকর হাতিয়ার বানিয়েছে। বিশেষত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এটি হয়ে উঠেছে ‘গেম-চেঞ্জার’।
ডেল্টা-উইং নকশার এই ড্রোনটি পুশার-চালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করে এবং প্রায় ৫০ কেজি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। সর্বোচ্চ ১৮৫ কিমি/ঘণ্টা গতিতে এটি প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলার পর ইরান রাশিয়াকে শাহেদ সরবরাহ শুরু করে। পরবর্তীতে রাশিয়া নিজস্বভাবে এ ধরনের ড্রোন উৎপাদন শুরু করে, যার নাম দেয় জেরান (জেরানিয়াম)। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি রাশিয়া প্রায়শই এই ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানছে।
এরই জবাবে যুক্তরাষ্ট্রও নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে অ্যারিজোনাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রওয়ার্কস তৈরি করেছে এলইউসিএএস (LUCAAS) নামের কম খরচের ড্রোন, যা ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা কৌশলে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: স্টারস অ্যান্ড স্ট্রাইপস, ইরান ইন্টারন্যাশনাল, ডিফেন্স ওয়ান
Leave a Reply