আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দিতে মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানান শতাধিক কূটনীতিক।
গাজায় ইসরাইলি অভিযান ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে হামলার প্রতিবাদে তারা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন।
টাইমস অব ইসরাইল ও মিডল ইস্ট আই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) অধিবেশন চলাকালে এই নজিরবিহীন ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটে।
নেতানিয়াহুর উপস্থিতির প্রতিবাদে জাতিসংঘের সভাকক্ষ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যান বহু প্রতিনিধি, ফলে কিছু সময়ের জন্য বাইরে সৃষ্টি হয় ভিড় ও বিশৃঙ্খলা।
যদিও ইসরাইলের সমর্থক কিছু প্রতিনিধিদল করতালির মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মার্কিন প্রতিনিধি দল করতালির মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে স্বাগত জানালেও, ব্রাজিলের প্রতিনিধিরা ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ পরে স্পষ্টভাবে অবস্থান জানান।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই বিভিন্ন চিঠির মাধ্যমে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিল, যেন নেতানিয়াহুর ভাষণ বর্জন করা হয়। তাদের অভিযোগ, গাজায় ইসরাইলি অভিযানের মাধ্যমে তিনি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত।
২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় পরিচালিত অভিযানে অসংখ্য সাধারণ মানুষের মৃত্যু ও বেসামরিক অবকাঠামোর ধ্বংসযজ্ঞের জন্য তিনি সরাসরি দায়ী।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, চলমান যুদ্ধের ফলে এখন পর্যন্ত গাজায় দুই লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দা তথ্যেও দেখা গেছে, ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত নিহতদের ৮০ শতাংশের বেশি সাধারণ মানুষ ছিলেন।
গাজার আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লাখো মানুষ একাধিকবার গৃহহীন হয়েছেন। এই মানবিক সংকটের মধ্যেই নেতানিয়াহুর জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়া এবং তা বর্জনের এই ঘটনাকে অনেকে ‘কূটনৈতিক প্রতিবাদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ বলেও উল্লেখ করছেন।
Leave a Reply