
ডেস্ক:: বাংলাদেশ সরকার প্রতিরক্ষা খাতকে আধুনিক ও আত্মনির্ভর করে তুলতে ‘সামরিক অর্থনৈতিক অঞ্চল (ডিফেন্স ইকোনমিক জোন)’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই অঞ্চলে দেশীয়ভাবে ড্রোন, সাইবার নিরাপত্তা প্রযুক্তি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানিও করা হবে।
এই প্রকল্পটি স্বনির্ভর প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রাথমিক হিসেবে, এ খাতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ডিফেন্স ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা তুরস্ক ও পাকিস্তানের মডেল অনুসরণে একটি স্থায়ী সমন্বয় কাঠামো গঠনের সুপারিশ করেন, যা প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়ন কার্যক্রম তদারক করবে।
এছাড়া বৈঠকে ‘প্রতিরক্ষা শিল্প উন্নয়ন সম্পর্কিত জাতীয় নীতিমালা’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা উপদেষ্টাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ জাতীয় প্রতিরক্ষা শিল্প উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদ’ নামে আরেকটি পরিষদ গঠন করা হয়েছে, যা সামগ্রিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশেষায়িত ডিফেন্স ইকোনমিক জোন স্থাপনের বিষয়ে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, জোনটি কোন এলাকায়, কি পরিমাণ জমি নিয়ে স্থাপন করা হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। আমরা এখন পলিসি ও সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে কাজ করছি। বিভিন্ন বন্ধুসুলভ দেশের সঙ্গে কথা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা শিল্পকে রপ্তানিমুখী শিল্পে পরিণত করার লক্ষ্যও রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান, ভারত ও চীনসহ অনেক দেশ প্রতিরক্ষা শিল্পে মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। অথচ, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা শিল্পে খুব একটা অগ্রসর হতে পারেনি। অথচ, সামরিক শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কমপক্ষে পাকিস্তানের সমকক্ষ হবার সামর্থ্য রাখে। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যেকোন মূল্যে প্রতিরক্ষা বাহিনী ও শিল্পকে শক্তিশালী করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
Leave a Reply