
ডেস্ক :: রাজশাহীর তানোর উপজেলায় পরিত্যক্ত একটি গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়া দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খান শিশুটিকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার দুপুরে কোয়েলহাট গ্রামের মাঠের পাশ দিয়ে মায়ের সঙ্গে হাঁটার সময় অসাবধানতাবশত পরিত্যক্ত নলকূপের গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। মায়ের চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে এলে প্রথমে তারা উদ্ধার চেষ্টা চালায়। ব্যর্থ হলে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তিনটি ইউনিট এসে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান শুরু করে।
প্রথম ধাপে ফায়ার সার্ভিস চার্জ ভিশন ক্যামেরা দিয়ে প্রায় ৩৫ ফুট পর্যন্ত অনুসন্ধান চালালেও শিশুর অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। পরে পাশেই এস্কেভেটর দিয়ে রাতভর গভীর গর্ত খনন করা হয়। সকাল পর্যন্ত চলা এই প্রচেষ্টাতেও শিশুর অবস্থান নির্ণয় সম্ভব হয়নি। এরপর আবারও ক্যামেরা নামানো হলে নলকূপে শুধু মাটিই দেখা যায়।
একপর্যায়ে নতুন করে খননের সিদ্ধান্ত নেয় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে শিশু সাজিদকে তুলে আনতে সক্ষম হয় তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর খানেক আগে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ওই নলকূপ খোঁড়া হয়েছিল। পানি না ওঠায় মালিক সেটি মাটি দিয়ে ঢেকে রাখেন। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে ঢেকে রাখা মাটি ধসে মুখ উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ায় সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে।
শিশুর মা রুনা খাতুন বলেন, “বুধবার দুপুর ১টার দিকে মেজো ছেলে সাজিদের হাত ধরে মাঠে যাচ্ছিলাম। ছোট সন্তানটি কোলে ছিল। হঠাৎ সাজিদ ‘মা’ বলে ডাকতেই তাকিয়ে দেখি, সে নেই। পরে গর্তের ভেতর থেকে ‘মা, মা’ বলে ডাক শুনি।”
তার ভাষায়, গর্তটি খড় দিয়ে ঢাকা থাকায় তিনি বা তার সন্তান কেউই সেটি টের পাননি। পা রাখতেই শিশুটি নিচে পড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও স্থানীয়দের সমন্বিত দীর্ঘ প্রচেষ্টায় অবশেষে শিশুটি জীবিত উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।
Leave a Reply