
চিতলমারী প্রতিনিধি:: বাগেরহাটের চিতলমারীতে সার ডিলার নিয়োগে নীতিমালা ভঙ্গের খবর প্রকাশের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তরা নড়েচড়ে বসেছেন। গত ৯ ও ১০ ডিসেম্বর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিফাত-আল-মারুফ, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুকেশ গোলদার, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অলোক মজুমদার ও শংকর মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় সার ডিলার নিয়োগের সুপারিশে নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২৭ নভেম্বেরের সুপারিশের ওই রেজুলেশন বাতিল করে ৩ সদস্যর তদন্তটিম গঠন করেন। তদন্তটিম তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও ১১ ডিসেম্বরের রেজুলেশনে কারো নামে সুপারিশ করা হয়নি। এ নিয়ে উপজেলাব্যাপী কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইছে। এলাকার সাধারণ কৃষকেরা অসভ্য ও অসামাজিক প্রকৃতি কোন ব্যবসায়ীকে নতুন নীতিমালার সার লাইসেন্স না দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০২৫ অনুযায়ী চিতলমারী সদর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে সার ডিলার নিয়োগের জন্য ‘মের্সাস শেখ ব্রাদার্স’ ও ‘মের্সাস হাজরা ট্রেডার্স’ আবেদন করেন। নীতিমালা উপেক্ষা করে ২৭ নভেম্বর চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটি সদস্য সচিব মোঃ সিফাত-আল-মারুফ কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়ে ‘মের্সাস হাজরা ট্রেডার্স’কে সুপারিশ করেন। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার পেতে চিতলমারী বাজারের বিএডিসি সার ডিলার ‘মের্সাস শেখ ব্রাদার্সে’র মালিক মোঃ ফেরদাউস শেখ জেলা সার ও বীজ মনিটিরিং কমিটির সদস্য সচিব এবং উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি গত ৯ ও ১০ ডিসেম্বর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ২৭ নভেম্বরের সুপারিশ স্থগিত করেন। সেই সাথে তিনি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোল্লা সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রভাত হালদারের সমন্বয়ে ৩ সদস্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটি পুঙ্খানু পুঙ্খানুভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। ওই দিনই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিফাত আল মারুফ কাউকে সুপারিশ ছাড়াই রেজুলেশন করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠান। আর এ ঘটনা নিয়ে উপজেলা ব্যাপী কৃষক ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইছে।
এ ব্যাপার মের্সাস শেখ ব্রাদার্সের মালিক মোঃ ফেরদাউস শেখ বলেন, ‘তদন্তে প্রমানীত হয়েছে আমার নিজস্ব সার গুদাম আছে এবং আমার ভাড়াকৃত গুদাম উন্নত ও ১ হাজার বর্গফুট বড়। তারপরও নতুন রেজুলেশনে আমাকে সুপারিশ করা হয়নি। এটি কর্মকর্তাদের পক্ষপাতিত্বের বহিঃপ্রকাশ।’
চিতলমারীর পাটরপাড়া গ্রামের মুজিবর বিশ্বাস, হরিপদ হালদার, কাঙ্গাল মালাকার, সাবোখালী গ্রামের পংকজ রাজবংশী, লিটন বিশ্বাস, অনাথসহ অসংখ্য চাষীরা বলেন, ‘মের্সাস হাজরা ট্রেডার্সের মালিক জীবন হাজরা ও তার ছেলে ভাস্কর হাজারার আচারণ ও ব্যবহার অসভ্য প্রকৃতির। আমাদের দাবি নতুন নীতিমালায় কোন সভ্য ব্যবসায়ীকে ডিলারশীপ প্রদান করা হোক।’
মের্সাস হাজরা ট্রের্ডাসের মালিক জীবন হাজরা বলেন, ‘বিগত দিনে আমি কারো সাথে কোন খারাপ আচারণ করিনি। ব্যবসার স্বার্থে টুকটাক কথা কাটাকাটি হতে পারে।’
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিফাত-আল-মারুফ কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
তবে, চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘জেলার নির্দেশে পুনরায় তদন্ত করেছি। তদন্ত প্রতিবেদনসহ রেজুলেশন প্রদান করা হয়েছে। জেলা সিদ্ধান্ত নিবে কাকে ডিলারশীপ প্রদান করা হবে।
Leave a Reply