1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
৯ কোটি ২০ লাখে আইপিএলে দল পেলেন মুস্তাফিজ বিবিসির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ১০ বিলিয়ন ডলারের মামলা ষড়যন্ত্রকারী ও ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না-প্রধান উপদেষ্টা বিজয় দিবসে সশস্ত্র বাহিনীর আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, বিশ্বরেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন জাতীয় পার্টির খুলনা মহানগর এর উদ্যোগে মহান বিজয় দিবসের সভা অনুষ্ঠিত খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত কোস্টগার্ড জাহাজ ‘বিসিজিএস কামরুজ্জামান’ মোংলায় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘আবু বকর’ ঘুরে দেখলেন দর্শনার্থীরা

ষড়যন্ত্রকারী ও ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না-প্রধান উপদেষ্টা

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক:; প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন যে ভয় দেখিয়ে গণতান্ত্রিক অগ্রগতিকে থামানো যাবে না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশে ও বিশ্বজুড়ে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে জানাই বিজয়ের উষ্ণ শুভেচ্ছা। আজ বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর এই দিনে আমরা কাঙ্ক্ষিত বিজয়ের স্বাদ লাভ করি। অনেক ত্যাগ, তিতিক্ষা এবং লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন দেশ এবং লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছি। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীনতার জন্য যুগ যুগ ধরে লড়াই-সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী বীর যোদ্ধা ও শহিদদের। তাঁদের এই অবদান আমাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা ও সাহস যোগায়, সকল সংকট-সংগ্রামে দেখায় মুক্তির পথ।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে স্বাধীনতার যে নতুন সূর্য উদিত হয়েছিল, বিগত বছরগুলোতে তা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদে ম্লান হয়েছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবারও একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, স্বাধীন ও সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি উন্নত ও সুশাসিত বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলতে যে বিস্তৃত সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, দেশের আপামর জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে আজ আমরা তার সফল সমাপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছি।

মুহাম্মদ ইউনূস গভীর বেদনার সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি শুধু একজন ব্যক্তির ওপর আঘাত নয় এটি বাংলাদেশের অস্তিত্বের ওপর আঘাত, আমাদের গণতান্ত্রিক পথচলার ওপর আঘাত। শরিফ ওসমান হাদি বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তাঁর চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। আপনারা তাঁর জন্য মহান আল্লাহতালার কাছে দোয়া করুন।

তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, সরকার এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা গেছে। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, যারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত, তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টদের এই অপচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দেওয়া হবে। ভয় দেখিয়ে, সন্ত্রাস ঘটিয়ে বা রক্ত ঝরিয়ে এই দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে কেউ থামাতে পারবে না।

তিনি সংযম বজায় রাখার এবং অপপ্রচার বা গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ফ্যাসিস্ট টেরোরিস্টরা, যারা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়, আমরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের মোকাবিলা করব। তাদের ফাঁদে পা দেব না। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি এ দেশের পবিত্র মাটিতে আর কোনোদিন ফিরে আসবে না।

প্রধান উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রিয় দেশবাসী, আমাদের তরুণদের রক্ষা করুন। তাহলে আমরা সবাই এবং আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি রক্ষা পাবে। যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে তারা বুঝে গেছে তরুণ যোদ্ধারা তাদের পুনরুত্থানের পক্ষে ভীষণ রকম বাধা। এই নিরস্ত্র, ভীতিহীন, ব্যক্তিগত স্বার্থ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাদের সাংঘাতিক ভীতি। তাদের লক্ষ্য হলো নির্বাচন আসার আগেই পথের এই বাধাগুলি সরিয়ে ফেলা, নিজেদের রাজত্ব আবার কায়েম করা। এই চোরাগোপ্তা খুন করার উদ্যোগ তার একটি রূপ। আরও কঠিনতর পরিকল্পনা নিয়ে তাদের প্রস্তুতি আছে।

তিনি দেশের সবার প্রতি তরুণদের রক্ষা করার আহ্বান জানান এবং বলেন, “উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করে আমরা সবাই মিলে দেশের ওপর আমাদের পরিপূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠিত করবো। নির্বাচন অব্দি আর বাকি মাত্র দু’মাস। আমরা তাদের উপর নজর রাখবো এবং বাকি দিনের প্রতিটি দিন উৎসবমুখর করে রাখবো।”

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় নেত্রী, দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ বিষয়টি আমাদের সকলের জন্যই উদ্বেগের বিষয়। সরকার তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি শুরু থেকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অবিচল অঙ্গীকার, দেশের উন্নয়নে তাঁর অবদান এবং তাঁর প্রতি জনগণের শ্রদ্ধাময় আবেগ বিবেচনায় নিয়ে সরকার ইতোমধ্যেই তাঁকে রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। পরিবারের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে তাঁর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। দেশে চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ সব বিষয় বিবেচনায় রয়েছে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি প্রধান অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেন: জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার, একটি জবাবদিহিমূলক ও কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের জন্য রাষ্ট্রকাঠামোর প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।

তিনি জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক একটি মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল স্বাধীন ও স্বচ্ছ প্রমাণভিত্তিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন। সরকার পলাতক শেখ হাসিনা এবং অপর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে দেশে ফেরানোর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার সম্পন্ন করা হয়েছে। সংস্কারের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ, যা মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কার নিশ্চিত করার জন্য আদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে এখন নাগরিকদের অনুমোদন নেওয়ার পালা। তাই আগামী নির্বাচনে আপনাদের সিদ্ধান্ত অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনের সময় একইসঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদের ওপর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই গণভোটে আপনারা হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে সংস্কারের পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত দিন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট