1. dailybanglarkhabor2010@gmail.com : দৈনিক বাংলার খবর : দৈনিক বাংলার খবর
বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
পেট্রাপোল সীমান্তে সনাতনী ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল চাঁদপুরে কোস্টগার্ডের অভিযানে গাঁজাসহ মাদককারবারি আটক পাইকগাছায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ চারজন বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ ৫০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলা বন্দরের সক্ষমতা ও নিরাপত্তায় যুক্ত হচ্ছে ‘সার্চ এন্ড রেসকিউ ভেসেল’ বাগেরহাটে পূর্ব বিরোধের জেরে হামলা, দুই ভাইসহ আহত ৫ বাঁশখালীতে কোস্টগার্ডের অভিযানে ট্রলিং বোট ও মাছসহ ১৬ জেলে আটক তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশায় ঘোড়াঘাট বিএনপির আনন্দ মিছিল দাকোপে বড়দিন পালনে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে ইউএনও মতবিনিময় বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভব চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভব চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

বেনাপোল প্রতিনিধি:: বেনাপোল কাস্টমস হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভব চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে আমদানিকৃত পণ্য খালাসে ব্যাপক অনিয়ম ও সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তার এ সমস্ত কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা । আর এই রাজস্ব কর্মকর্তাকে সকল অনিয়মে সহযোগিতা করছেন প্রশাসনিক রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। শফিকুল ইসলামের বেনাপোল কাস্টম সহজে ৪ নম্বর শুল্কায়ন গ্রুপের দায়িত্ব থাকলেও তিনি সেখানে ঠিকমত দায়িত্ব পালন করেন না। অফিস টাইমে মাত্র দেড় ঘন্টা শুল্কায়নের কাজ করেন তিনি। বাকি সময়টা তিনি ওই রাজস্ব কর্মকর্তার সাথে প্রশাসন দপ্তরে বসেই তার অনিয়মের কাজগুলো করে থাকেন বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন। যার ফলে বন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে স্থবিরতা সহ হাউজের চার নম্বর শুল্কায়নের কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভব চন্দ্র পাল সবেমাত্র যোগদান করার পর বেনাপোল বন্দরের তিন নম্বর পরীক্ষণ গ্রুপের দায়িত্বে রয়েছেন। উদ্ভব চন্দ্র পাল এখানে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রশাসনিক সুপার শফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফাইল প্রতি তার চাহিদা মতো টাকা না দিলে তিনি ওই সমস্ত ফাইলে স্বাক্ষর করেন না। এমনকি তিনি মালামাল পরীক্ষণে যান না । আর আমদানি করা মাল দেখতে গেলেও তার চোখে নানা অনিয়ম ধরা পড়ে । এটা হবে না ওটা হবে না এটা করা যাবে না ওটা করা যাবে না । নানান অজুহাত দেখাতে থাকে যাতে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হয়। এতে করে এ বন্দর দিয়ে আমদানিকারকরা পন্য আমদানি করতে করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, পচনশীল পন্য সাধারণত সব শুল্ক স্টেশনের কমিশনার মহোদয়ের কাছে আবেদনের মাধ্যমে ভারতীয় গাড়ি থেকে বাংলাদেশী গাড়িতে খালাস হয়ে থাকে। এখানে রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভব চন্দ্র পালের কথা হলো ভারতীয় ট্রাক থেকে বাংলাদেশী ট্রাকে খালাস করতে হলে ট্রাকপ্রতি তাকে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। অন্যথায় গাড়ি থেকে গাড়িতে খালাস হবে না। তার এই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কোন অফিসার প্রতিবাদ করলে সুপার শফিকুল এর পরামর্শে তার বিরুদ্ধে কমিশনার মহোদয়ের কাছে অভিযোগ করে তাকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় । এসব নানা অনিয়ম কারণে আজ বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানিকারকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টমসের দু-একজন কর্মকর্তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমদানিকারকরা এ বন্দর থেকে পচনশীল বা ফল জাতীয় পণ্য আমদানি করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।

বাগেরহাটের পান ব্যবসায়ী সরাফত ইসলাম জানান, আমি গত সাত থেকে আট বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে পান জাতীয় পণ্য আমদানি করে আসছি। এই আমদানি করা পণ্য আমরা বাগেরহাট ও খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে বিক্রি করে থাকি। কিন্তু বর্তমান বেনাপোল বন্দর দিয়ে পান আমদানি করতে গিয়ে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভাব চন্দ্র পালের দ্বারা নানাভাবে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। কাস্টমসের দু-একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাতে নানাভাবে হয়রানি করে আমাদেরকে আমদানি করতে নিরুৎসাহিত করছেন। আবার গাড়ি প্রতি মোটা অংকের টাকা দিলে কোন সমস্যা হচ্ছে না । কিন্তু আমার কথা হল এক গাড়ি পান আমদানি করে বিক্রি করে হয়তো ১০থেকে ১৫ হাজার টাকা আমাদের লাভ থাকে। অথচ ওই কাস্টমস কর্মকর্তা যদি গাড়ি প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দাবি করে তাহলে আমরা এই টাকা কোথা থেকে দিবো? কাস্টমস কর্মকর্তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে এখন আমি পান আমদানি বন্ধ করে দিয়েছি।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেনাপোলের একজন সিএন্ডএফ প্রতিনিধি জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানিকারকরা কাঁচামাল আমদানি করতে চাচ্ছে না। আগে যেখানে প্রতিদিন ৫০-৭০ গাড়ি বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল এবং ফল জাতীয় পণ্য আমদানি হতো। এখন সেখানে প্রতিদিন ১০-১৫ গাড়ি কাঁচামাল জাতীয় পণ্য আমদানি হচ্ছে ।এসব আমদানি পণ্য এখন সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানি করছেন আমদানি কারকরা।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি না করার কারণ জানতে চাইলে এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, বেনাপোল কাস্টমসে হাউজে বর্তমান কাজে অনেকটা স্বচ্ছতা ফিরে আসলেও দু-একজন কর্মকর্তার যন্ত্রণায় আমরা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। এই দু’একজন কর্মকর্তা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কথা ঠিকমতো পালন করছেন না । তারা রাজস্ব আদায়ের দিকে নজর না দিয়ে নিজের পকেট ভারি করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমরা যারা কাঁচামলের কাজ করি থাকি তারা এখন সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছি পরীক্ষণ গ্রুপ ৩ এর রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভাব চন্দ্রের দ্বারা। তিনি কোন কাঁচামাল বন্দরে প্রবেশ করলে নানামুখী হয়রানি করে থাকেন । গাড়ি-প্রতি মোটা অংকের টাকা দাবি করেন তিনি। কিন্তু তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে গেলে আমাদেরকে আমদানিকৃত পন্যে অনিয়ম করতে হয়। আর অনিয়ম করলে তখন আরো বেশি বিপদ । এজন্য আমরা স্বচ্ছতার সাথে কাজ করার চেষ্টা করছি কিন্তু পরীক্ষার গ্রুপ ৩ এর রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভাব চন্দ্র পাল আমাদের অসহযোগিতা করছেন। তিনি আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি এবং আমদানি করতে নিরুৎসাহিত করছেন।

বেনাপোল কাস্টমস এর প্রশাসনিক রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় এই রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভাব চন্দ্র তার এই নানামুখী হয়রানী গুলো চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ভাব চন্দ্র তিনি শুধু আমদানিকারক বা আমাদের ক্ষতি করছে না। তিনি দেশের ও ক্ষতি করছেন। তিনি রাজস্ব আদায়ে বাধাগ্রস্থ করছেন। যাতে সরকার বিপাকে পড়ে। গত এক মাসে এভাবে তিনি ৩ নম্বর পরীক্ষন গ্রুপ থেকে ২০ জন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ২৭ লক্ষাধিক টাকা উৎকোচ আদায় করেছেন। এসব টাকা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করতে তার নিজস্ব দুজন লোক আছে। তারা হলেন ফল ব্যবসায়ি শামিমের কর্মচারী তৌহিদ ও জিয়া নামে দুটি ছেলে। তারা তার এই ঘুষের টাকা আদায় করে থাকেন। ঘুষের এই টাকার ৪০ শতাংশ দেয়া হয় প্রশাসনিক সুপার শফিকুল ইসলামকে।

বেনাপোল সি এন্ড এফ এজেন্টের এক নেতা জানান, আমরা পরীক্ষণ গ্রুপ ৩ এর রাজস্ব কর্মকর্তা এবং শুল্কায়ন গ্রুপ ৪ এর রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বারবার বেনাপোল কাস্টমস এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে বলেছি তিনি আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত তাদের দুজনকে সেখানে থেকে এখনও পর্যন্ত অন্যত্র বদলী করা হয়নি। আসলে এটা খুবই দুঃখজনক। সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাকে অপসারণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।

এ ব্যাপারে কাস্টমস কমিশনার আবু হোসেন মোহাম্মদ খালিদ বলেন, বিষয়টা আমি ক্ষতিয়ে দেখছি। সত্য হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি চেষ্টা করছি বেনাপোল কাস্টমসে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে। হয়তো শতভাগ স্বচ্ছতা পারব না তারপরেও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে। তিনি আরো বলেন বেনাপোল কাস্টমস হাউজে আমদানি হয়তো কিছুটা কম হচ্ছে তবে কাজের গতি অনেকাংশে বেড়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত দৈনিক বাংলার খবর
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট