
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: মালয়েশিয়ার বহুল আলোচিত ‘১এমডিবি’ (1MDB) রাষ্ট্রীয় তহবিল কেলেঙ্কারির সবচেয়ে বড় মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ২.৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১১.৩৯ বিলিয়ন রিঙ্গিত) জরিমানা করা হয়েছে।
শুক্রবার মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের বিচারক কলিন লরেন্স সেকুয়েরাহ রায়ে উল্লেখ করেন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ২১টি মানি লন্ডারিং মামলার সবকটিতেই নাজিব রাজাক দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, নাজিবের এই দাবি যে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন তা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং প্রমাণ হয়েছে যে, তিনি নিজের বিস্তৃত ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে অন্য একটি মামলায় কারাগারে থাকা নাজিবের এই নতুন সাজা ২০২৮ সালে বর্তমান কারাদণ্ড শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে।
তদন্তকারীদের তথ্যমতে, নাজিব রাজাকের প্রতিষ্ঠিত ১এমডিবি তহবিল থেকে অন্তত ৪.৫ বিলিয়ন ডলার চুরি করা হয়েছে, যার মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সরাসরি নাজিবের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল। এই বিপুল অর্থ বিলাসবহুল জীবনযাপন, সুপার ইয়ট ক্রয় এবং হলিউড সিনেমা ‘দ্য উলফ অব ওয়াল স্ট্রিট’-এর অর্থায়নে ব্যয় করার অভিযোগ রয়েছে। যদিও নাজিব দাবি করেছিলেন এই অর্থ সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে এসেছিল, তবে আদালত সেই যুক্তি নাকচ করে দিয়েছেন।
এই রায় মালয়েশিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন জোটের অন্যতম শরিক দল উমনো (UMNO)-তে নাজিবের ব্যাপক প্রভাব থাকায় সরকার কিছুটা চাপের মুখে পড়তে পারে। মালয়েশিয়া অ্যান্টি-করাপশন কমিশন (MACC) এই রায়কে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় অর্জন এবং দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন হিসেবে অভিহিত করেছে।
Leave a Reply