
নিজস্ব প্রতিবেদক:: শোকাতুর পরিবেশ আর হাজারো মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদির (ওসমান হাদি) মরদেহ।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৫৮৫ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর থেকে হাদির নিথর দেহ নিয়ে আসা বিমানটি রানওয়ে স্পর্শ করার সাথে সাথেই বিমানবন্দর এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে বলে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রিয় নেতার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে আগে থেকেই বিমানবন্দর ও শাহবাগগামী সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন সহযোদ্ধা, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ। সংগঠনের পক্ষ থেকে শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা ও সংযম বজায় রেখে হাদিকে বরণ করে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগকালে রাজধানীর বিজয়নগরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওসমান হাদি। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও চিকিৎসকদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার এই শাহাদাত বরণের খবরে দেশজুড়ে শোকের পাশাপাশি বিচারের দাবিতে তীব্র জনমত তৈরি হয়েছে।
ওসমান হাদির প্রয়াণ কেবল একজন সংগঠকের মৃত্যু নয়, বরং এটি একটি অকুতোভয় কণ্ঠস্বরের নীরব হয়ে যাওয়া। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ন্যায়ের পক্ষে তার আপসহীন অবস্থান তরুণ প্রজন্মের কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আজ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে তার জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি পালন করা হবে। সেখানে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের এক বিশাল জমায়েতের সম্ভাবনা রয়েছে, যারা এই বীর যোদ্ধার ত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে রাজপথে উপস্থিত হয়েছেন।
Leave a Reply