অরুন দেবনাথ, ডুমুরিয়া, খুলনা:: চলতি অতি-বর্ষায় ডুমুরিয়া উপজেলার বেশ-কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আরও অর্ধশতাধিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কমে গেছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে জলাবদ্ধ পরিস্থিতি দেখে, সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ২’শ ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাধবকাঠি, সিংগা, ঘোষড়া, জালিয়াখালী, চাঁদগড়, কুড়েঘাটা, কেবি ও মুজাঘুটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিগত বেশ-কিছুদিন যাবৎ ছাত্র-ছাত্রী না আসতে পারায় পাঠদান কার্যক্রম থমকে পড়েছে। এছাড়া আরও ২০টিরও অধিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম হচ্ছে। অপরদিকে উপজেলায় ৬৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে আটলিয়া ইউনিয়নের এ.কে.বি.কে মাধ্যমিক ও রংপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর মুজারঘুটা বটবেড়া বারানসী বসুরাবাদ সাড়াভিটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে কয়েক ফুট পানি জমে থাকায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়া এলাকার রাস্তা-বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে থাকায় আরও ৩০টিরও অধিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই স্কুলে আসতে না পারায় বিদ্যালয়গুলো ফাঁকা দেখাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে এ.কে.বি.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী তিথি মন্ডল স্কুলে আসার রাস্তায় পানির মধ্যে দাড়িয়ে বলেন, এই জলের মধ্যে আমরা কি ভাবে স্কুলে যাবো ? স্কুলে যাওয়ার সময় জামা-প্যান্ট ভিজে থাকে, আর যায়ে দেখি ক্লাসেও জল। সারাদিন এই ভিজে কাপড়েই থাকতে হয়। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দিপক সরকার বলেন, আমাদের বিদ্যালয় সংলগ্ন আধারমানিক, বৈটাহারা, বয়ারসিং, খলশীবুনিয়া, মঠবুনিয়া-সহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষেও জল জমে আছে। তাই গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে আমাদের বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেওয়ার জন্য একটা নৌকা কিনেছি। প্রতিদিন ওই নৌকায় করে ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী আসে। আমরা তাদেরকে পাঠদানের চেষ্টা করছি। কৃষ্ণনগর মুজারঘুটা বটবেড়া বারানসী বসুরাবাদ সাড়াভিটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিয়াল হালদার বলেন, স্কুলের মাঠ তলিয়ে নিচতলায় পানি উঠে গেছে। তাছাড়া আমাদের বারানসী গ্রামের রাস্তা তলিয়ে থাকায় আসা-যাওয়ায় খুবই অসুবিধা চলছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমান রায় বলেন, আমাদের বিল ডাকাতিয়া অঞ্চলের সকল মাছের ঘের, বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট সম্পূর্ণ তলিয়ে রয়েছে। আমরা শিক্ষকরা হাজির থাকলেও শিক্ষার্থীরা না আসতে পারায় পাঠদান থমকে পড়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেবাশিষ বিশ্বাস বলেন, পানির কারণে আমাদের ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম থমকে পড়েছে। তাছাড়া গ্রামের রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসতে পারছে না। উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, সাম্পতিক বর্ষায় শিশুরাই বেশি সমস্যায় পড়েছে। ৬-৭টি স্কুলে শিশুরা আসছেই না। তাছাড়া আরও ২০টিরও অধিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতি খুবই কমে গেছে।
Leave a Reply