বেনাপোল প্রতিনিধি:: যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া এলাকার বিশিষ্ট মাছ ব্যবসায়ী এবং শার্শা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কুদ্দুস বিশ্বাস (৫০) দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন।
চিকিৎসকদের মতে, জীবন রক্ষার একমাত্র উপায় ছিল কিডনি প্রতিস্থাপন। এই সংকটময় সময়ে তার স্ত্রী মোছাঃ ফারজানা (৩০) স্বামীকে বাঁচাতে এক মানবিক ও সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। নিজের একটি কিডনি স্বেচ্ছায় দান করেন।
সকল প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মিল পাওয়ার পর, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তুর্কিস্তানে পাঠানো হয়। সেখানকার একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়।
দীর্ঘ চার মাসের চিকিৎসা শেষে শুক্রবার (২০ জুন) বিকালে হেলিকপ্টার করে তিনি নিজ এলাকায় ফিরে আসেন। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বাগআঁচড়া জনতা ইকোপার্ক মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণ করে।
এ সময় পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। হাজার হাজার মানুষ তাকে স্বাগত জানাতে রাস্তায় লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকেন। এলাকাবাসী ব্যানার-ফেস্টুন, ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেন। স্ত্রীর দেওয়া কিডনিতে নতুন জীবন ফিরে পেয়ে এলাকাবাসীর ভালোবাসায় তিনি আপ্লুত। এলাকাবাসীর মুখে মুখে এখন শুধু একটাই কথা ভালোবাসা বেঁচে আছে, ফারজানার মতো মানুষদের মাধ্যমে।
কুদ্দুস বিশ্বাস বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ও আমার স্ত্রীর সাহসিকতায় আমি দ্বিতীয়বারের মতো জীবন ফিরে পেয়েছি। এখন আমি আবার মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। তিনি স্ত্রী, চিকিৎসক ও এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও শার্শা উপজেলার সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, ‘এই ঘটনা শুধু চিকিৎসার সাফল্য নয়, এটা ভালোবাসা, আত্মত্যাগ আর মানবিকতার দৃষ্টান্ত। ফারজানা ভাবী শুধু একজন স্ত্রী নন, একজন সাহসী নারীও।’
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, ‘স্ত্রীর এমন আত্মত্যাগ সত্যিকারের ভালোবাসার নিদর্শন। স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ দান এক অনন্য দৃষ্টান্ত।’
আলহাজ¦ কুদ্দুস বিশ্বাস একজন সফল মাছ ব্যবসার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনেও ব্যাপকভাবে সক্রিয়। তার প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।
Leave a Reply