এম জালাল উদ্দীন:পাইকগাছা:: ভারী বর্ষণে উপকূলের পাইকগাছার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি বেড়েছে জনদূর্ভোগ। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি যেমন ফসলের তেমনি বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা কৃষি অফিস, আদালত চত্তর, উপজেলা পরিষদ চত্বর সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির পানিতে টুইটম্বুর। কয়েক দিনের একটানা ভারী বর্ষণে পাইকগাছার বিস্তির্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে এ বছর বর্ষকালের শুরু আষাড় মাসের প্রথম থেকেই একটানা গুড়ি গুড়ি, হালকা ও ভারি বৃষ্টি লেগেই আছে। এতে করে আমন ধানের বীজ তলা, সবজি ক্ষেত, মৎস্য লীজ ঘের, নার্সারী, পুকুর, বাগান, রাস্তা ও বসতবাড়ী তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী উঁচু এলাকা হলেও বাকী ৬টি ইউনিয়ন নিচু এলাকায় অবস্থিত। একারণে সামান্য বৃষ্টি হলে এ সকল এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তবে গত দিনের ভারী বর্ষণে উঁচু এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানা যায়। পৌর বাজারের স্বর্ণ পট্টি, মাছ বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ গ্রামীন রাস্তাগুলি পানিতে তলিয়ে থাকে। বাড়ির উঠানে পানিতে তলিয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিড়াম্বনায়। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষরা কাজ যেতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়ে আর্থিক অনাটনের মধ্যে পড়ে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়ন গদাইপুরের কয়েক’শ নার্সারী ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবজি ক্ষেত ও আমন ধান ঝড়ো হাওয়ায় পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টিতে মানুষের জনদূর্ভোগ বেড়েই চলেছে। গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক সামাদ গাজী জানান, ভারী বৃষ্টিতে নার্সারী, সবজি ও ধানের ক্ষেত সহ কুল, পেয়ারা ও লেবুর প্রায় তিন হাজার ছোট চারা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি বাড়ির উঠান পর্যন্ত তালিয়ে রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এলাকাবাসির একই অভিযোগ, পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের পানি নিঃস্কাশনের ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি বের হতে পারছে না। তাছাড়া ব্যক্তি স্বার্থে কিছু মানুষ তার বাড়ির সামনের বা আশে-পাশের ড্রেনটি বন্ধ করে রাখায় পানি নিষ্কাশনের সমস্যা হচ্ছে। পানি ঠিক মত বের হতে পারছে না। এতে করে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। পাইকগাছা মেইন সড়কের গোলাবাটি, সলুয়া, নতুন বাজার ও জিরো পয়েন্ট এলাকার ভাঙ্গা রাস্তা আরো ভেঙ্গে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। যানবাহন ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে এলাকা প্লাবিত হয়ে আমন ধানের বীজ তলা তলিয়ে গেছে ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের উপ-সহকারী কর্মকর্তারা ইউনিয়নে কাজ করছেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্লাবিত এলাকা পানি সরে গেলে আমন ধানের চারার তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, ভারী বর্ষণে সারা দেশের ন্যায় পাইকগাছা উপজেলার ও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি নিঃস্কাশনের জন্য বেড়িবাঁধের স্লুইস গেটগুলি উন্মুক্ত রাখাসহ পানি ড্রেনগুলি পরিস্কার করার জন্য টিমের কাজ চলমান রয়েছে।
Leave a Reply