বিশেষ প্রতিবেদক:: ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়াসহ দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যু সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
রোববার ঢাকা সফরে থাকা পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়াসহ দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যু দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া এবং অভিন্ন স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে সহযোগিতামূলক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার গুরুত্বে জোর দেন।
বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, যোগাযোগ, সংস্কৃতি, পর্যটন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। উভয় পক্ষই ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সমুদ্র সংযোগ উন্নয়ন এবং বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।
পাকিস্তান-বাংলাদেশ নলেজ করিডোর চালু করার বিষয়ে প্রক্রিয়াধীন ঘোষণা করেন ইসহাক দার। এর অধীনে আগামী পাঁচ বছরে পাকিস্তানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ বৃত্তি দেওয়া হবে, যার এক-চতুর্থাংশ চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এছাড়া জুলাই বিদ্রোহের সময় আহত ৪০ জন শিক্ষার্থী ও ব্যক্তির অঙ্গ প্রতিস্থাপনসহ উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুতি নিয়েছে। পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে হকি দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে।
বৈঠকে উভয় দেশ দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য পাকিস্তানের সহায়তা কামনা করেছে। এছাড়া গাজা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের উপর চলমান ইসরায়েলি হামলার নিন্দা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অমীমাংসিত ইস্যু যেমন—সম্পদের বণ্টন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বৈদেশিক সাহায্য হস্তান্তর, আটকে থাকা পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন—দ্রুত সমাধানের জন্য আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকের সমাপ্তিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য, তথ্য উপদেষ্টা, পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রী জাম কামাল খান উপস্থিতিতে এক চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়।
Leave a Reply