ডেস্ক:: রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সরকার দেশের বিমানবন্দরের সকল সংস্থা ও এজেন্সির একক পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান বেবিচকের হাতে অর্পণ করেছে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী। উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিমানবাহিনী এবং বেবিচকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বৈঠকে মোট ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ দফা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি হলো— দেশের সব বিমানবন্দরে কার্যরত সংস্থা ও এজেন্সি এখন থেকে একক কর্তৃত্বের অধীনে পরিচালিত হবে। এই একক কমান্ডের নেতৃত্বে থাকবেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
এর ফলে বিমানবন্দরের কার্যক্রমে সুসংহত কমান্ড ব্যবস্থা তৈরি হবে, দায়িত্ববিভাজন আরও স্পষ্ট হবে এবং প্রতিটি কার্যক্রমে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
সভা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব যথারীতি পালন করবে; তবে সার্বিক সমন্বয়, নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ দায়িত্ব বেবিচকের হাতে থাকবে। এর ফলে প্রতিটি সংস্থার কাজের সীমারেখা স্পষ্ট হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কেন্দ্রস্থলও বেবিচকই হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেবিচককে দেশের সব বিমানবন্দরের একক কর্তৃত্ব দেওয়া একটি যুগান্তকারী মাইলফলক। দীর্ঘদিনের সমন্বয়হীনতা, দ্বন্দ্ব ও বিভ্রান্তি যেগুলো আগে বিমানবন্দরের কার্যক্রমকে ব্যাহত করত, তা এবার দূর হবে। একক কর্তৃত্বের ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও আস্থা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং বিমানবন্দরের কার্যক্রম আরও সুসংহত ও কার্যকর হবে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে, যা দেশের এভিয়েশন খাতের মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হঠাৎ ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে পড়লে পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে যায়। এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব ছেড়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন এবং নিরাপত্তা সামগ্রী এপ্রোনে ফেলে রেখে রানওয়ের পাশে অবস্থিত বিমানঘাঁটি একে খন্দকার, কুর্মিটোলায় আশ্রয় নেন। এই সময়ে বিমানবাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে।
এপিবিএনের অনুপস্থিতিতে সাময়িকভাবে বিমান চলাচল ব্যহত হয়, কিন্তু বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বেবিচকের নির্দেশনায় বিমান বাহিনী মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দরকে পুনরায় স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনে, যা নিঃসন্দেহে দ্রুত ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার একটি বড় উদাহরণ।
এছাড়া, ২৪ আগস্ট বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় শিষ্ঠাচার বহির্ভূত মন্তব্য করেন এপিবিএন-১৩ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শক্রমে তার অপসারণ চেয়ে আইজিপিকে আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রদান করা হয়।
Leave a Reply