
এম জালাল উদ্দীন:পাইকগাছা:: খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গদাইপুর বাজারে ভোরবেলার গাছের চারার হাট এখন ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত। হাটে প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায় চারার বেচাকেনা। তবে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে বিকেল বেলাতেও আংশিকভাবে চারার হাট বসে।
বর্ষাকাল বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়। আষাঢ়-শ্রাবণ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বর্ষার মতো বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে চারা রোপণের আদর্শ পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে গদাইপুরের ভোরবেলার হাটে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ, ফুল ও ঔষধি গাছের চারা ক্রয়-বিক্রয়ে হিড়িক পড়েছে।
গদাইপুরের এই চারার হাট শুধু পাইকগাছার নয়, পুরো দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কয়রা, দেবহাটা, তালা, আশাশুনি, পাটকেলঘাটা, কুলিয়া, আঠার মাইলসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী ও খুচরা ক্রেতারা ভোরের এই হাট থেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। রাতের আঁধারেই অনেক ব্যবসায়ী দূরদূরান্ত থেকে রওনা দিয়ে ভোরে গদাইপুর পৌঁছে থাকেন। পরে সেসব চারা বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন তারা।
গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে চারশ’ নার্সারি রয়েছে। এখানকার নার্সারিগুলোতে উৎপাদিত চারা দেশব্যাপী সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে গদাইপুর নার্সারির সুনাম এখন দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে।
চারা ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন ও মিজানুর রহমান জানান, “এবার প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চারার চাহিদা বেড়েছে, আর বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
হাটে আম, কাঁঠাল, জাম, জামরুল, লিচু, কদবেল, বিভিন্ন জাতের কুল, পেয়ারা, বাতাবি লেবু, মাল্টা, কমলা, দেশি-বিদেশি নারিকেল, সুপারী, মেহগনি, সিরিশ, লম্বুসহ নানা প্রজাতির চারা পাওয়া যাচ্ছে। সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা পর্যন্ত দামে এসব চারা বিক্রি হচ্ছে। মাল্টা, কমলা ও বিদেশি নারিকেলের চারা দাম তুলনামূলক বেশি—৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রত্যেককে বাড়ির আঙিনায় অন্তত চার-পাঁচটি ফলদ বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। ভোরের হাট থেকে চারা কিনলে সূর্যের তাপ ছাড়াই ক্রেতারা সুস্থ ও সবল চারা গন্তব্যস্থলে পৌঁছে নিতে পারেন। এতে চারার মানও ভালো থাকে।
Leave a Reply