দাকোপ প্রতিনিধি:: কোন সহিংস ঘটনা বা কোন ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিকারী কোন প্রার্থীর ভোট বর্জন ছাড়াই ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের সাধারন নির্বাচন খুলনার দাকোপে শান্তি শৃঙ্খলা পরিবেশের পাশাপাশি নিরূত্তাপতার সাথে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (৫জুন) দাকোপ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ কালে উপজেলার ৫৪টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা পুরুষ ভোটার অপেক্ষা মহিলা ভোটারের উপস্থিতি অনেকটা বেশি ছিলো। সকাল সাড়ে ১০টার পর ভোটারদের লাইন কোথাও দেখা যায়নি। দুপুর সাড়ে ১১টার পর অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোটাদের উপস্থিততি কম থাকায় সে সব ভোট কেন্দ্র গুলোতে দেখা গেছে ভোট দিতে আসা ৪ থেকে ৫ জন করে ভোটার তারা কিছু সময় লাইনে দাড়ানোর পর পরই তাদের ভোট প্রদান হয়ে যাচ্ছে। দুপুর ১২টার দিকে অনেক ভোট কেন্দ্রের মাঠ ফাঁকা থাকার কারণে বুথগুলোতে ভোটারদের নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বিঘেœ দায়িত্ব পালন করছেন। ভোট কেন্দ্রের ভিতরে ভোটাররা না থাকায় প্রার্থীদের এজেন্টরা একে অপারের সাথে কথা বলছেন আবার কেউ কেউ গল্প করছেন। এ ব্যাপারে তাদের সাথে কথা হলে তারা সবাই জানান,ভোটাররা বুথে না থাকায় আমরা একে অপারের সাথে কথা বলছি। বাজুয়া ইউনিয়নের চুনকুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র প্রিজাইডিং অফিসার মিলন কুমার মন্ডল জানান,এ ভোট কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৭শত ৪২ জন। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১৬৬টি। পুর্ব বাজুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার মৃন্ময় গোলদার জানান,এ ভোট কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৫শত। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১৫০টি। লাউডোব এম এন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান,এ কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ২ হাজার ৬শত ২জন।সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৩১৪জন ভোটার। বানিশান্তা ইউনিয়নের লাউডোব বানিশান্তা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ মোসলেম উদ্দিন জানান,এ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২৬ জন। বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৭২৪ জন। চুনকুড়ি মিশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সুৃরজিত প্রামান্য জানান,এ কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ২হাজার ৫শত ৯জন। বেলা ১২টার পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৪৮৭জন ভোটার।কৈলাশগঞ্জ মাতৃমন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার প্রজিত কুমার রায় জানান,এ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৩শত ৪৩ জন। দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ১ হাজার ১৫৬ জন ভোটার। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন,দুপুর ২টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রে পুরুষ ভোটার অপেক্ষা মহিলা ভোটারের উপস্থিত একটু বেশি ছিলো। তবে আশা করা হচ্ছে,দুপুর আড়াইটার পর ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে।
দুপুর ২টায় পর কৈলাশগঞ্জ মাতৃ মন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে উপজেলার ৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টদের সাথে হলে দোয়াত-কলম প্রতীকের এজেন্ট পুষ্প মন্ডল,আনারস প্রতীকের এজেন্ট মেঘনাথ জোয়াদ্দার এবং ঘোড়া প্রতীকের এজেন্ট বিরেন্দ্র নাথ রায় জানান,সকল ৮ থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ ভোট কেন্দ্রে শান্তি পূর্ণ ভোট হয়েছে। কোন জাল ভোট কেউ দিতে পারেনি। কোন প্রার্থীর পক্ষে কাউকে বুথে আসতে দেখিনি।
এ দিকে উপজেলার ৫৪টি ভোট কেন্দ্রে ভোট চলাকালিন সময়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্র গুলিতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদান করায় কোন ভোট কেন্দ্রে বা ভোট কেন্দ্রের আশাপাশে কোন সহিংস ঘটনাসহ বা ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতায়ের কোন ঘটনা শোনা যায়নি।
নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন দুপুর ২টা ৪৪ মিনিটে দোয়াত-কলমের চেয়ারম্যান প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মন্ডলের মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান,নির্বাচন অবাদ,সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে ভোট গণনা শেষ পর্যন্ত ভাল হলে হয়। দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ যুবরাজের সাথে নির্বাচন নিয়ে কথা হলে তিনি জানান,এখনো পর্যন্ত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। বাকি সময়টা এ ভাবে চললে নির্বাচনে আমি বিজয়ী হবো বলে আশারাখি। দুপুর ৩টায় ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম আবুল হোসেন জানান,নির্বাচন অবাদ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ভোট কেন্দ্রের বাহিরে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা আমার অনুসারী ও ভোটারদেরকে সুকৌশলে বাগাকে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন,আমি চাই প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসাররা নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষনা করুক। ইনশা আল্লাহ এ নির্বাচনে আমি বিজয়ী হবো । আপর দিকে চিংড়ি মাছ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সাইফুল ইসলামকে তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে ২টা ৪৬ মিনিটে কয়েক বার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি বলে তার সাথে কথা কথা বলা সম্ভব হয়নি। দাকোপ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩টি পদের বিপরীত ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বীন্দিতা করছেন।
Leave a Reply